কোরবানী সম্পর্কে কোরআনের আয়াত। কোরবানী সম্পর্কে হাদীস মাওলানা শরিফ আহমাদ

কোরবানী সম্পর্কে কোরআনের আয়াত

কোরবানী সম্পর্কে হাদীস

 

প্রিয় বন্ধুরা ! আসছে কোরবানীর ঈদ । চলছে প্রস্তুতি। উঠছে নানা প্রসঙ্গ। অনেকেই জানতে চাচ্ছেন কোরবানী সম্পর্কে কোরআনের আয়াত ও

কোরবানী সম্পর্কে হাদীস । তাই পর্যায়ক্রমে আয়াত এবং হাদীস উল্লেখ করছি। আশা করছি সকলে উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ ।

 

 

কোরবানী একমাত্র আল্লাহর জন্য

 

 

قُلۡ اِنَّ صَلَاتِیۡ وَنُسُکِیۡ وَمَحۡیَایَ وَمَمَاتِیۡ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ۙ

 

অনুবাদ: আপনি বলুন- আমার নামায, আমার কোরবানী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। (আল আনআম – ১৬২)

 

 

কোরবানীর ইতিহাস সংক্রান্ত আয়াত

 

 

وَاتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ ابۡنَیۡ اٰدَمَ بِالۡحَقِّ ۘ اِذۡ قَرَّبَا قُرۡبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنۡ اَحَدِہِمَا وَلَمۡ یُتَقَبَّلۡ مِنَ الۡاٰخَرِ ؕ قَالَ لَاَقۡتُلَنَّکَ ؕ قَالَ اِنَّمَا یَتَقَبَّلُ اللّٰہُ مِنَ الۡمُتَّقِیۡنَ

অনুবাদ: আপনি তাদেরকে আদমের দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শুনান। যখন তারা ভয়েই কিছু উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন তাদের একজনের উৎসর্গ গৃহীত হয়েছিল এবং অপরজনের গৃহীত হয়নি। সে বললঃ আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। সে বললঃ আল্লাহ ধর্মভীরুদের পক্ষ থেকেই তো গ্রহণ করেন।

(আল মায়িদাহ – ২৭)

আরও পড়ুনঃ ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

হজ্জ ও কোরবানী সংক্রান্ত আয়াত

কোরবানী সম্পর্কে কোরআনের আয়াত। কোরবানী সম্পর্কে হাদীস
কোরবানী সম্পর্কে কোরআনের আয়াত। কোরবানী সম্পর্কে হাদীস

 

وَاَتِمُّوا الۡحَجَّ وَالۡعُمۡرَۃَ لِلّٰہِ ؕ  فَاِنۡ اُحۡصِرۡتُمۡ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡہَدۡیِ ۚ  وَلَا تَحۡلِقُوۡا رُءُوۡسَکُمۡ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡہَدۡیُ مَحِلَّہٗ ؕ  فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ بِہٖۤ اَذًی مِّنۡ رَّاۡسِہٖ فَفِدۡیَۃٌ مِّنۡ صِیَامٍ اَوۡ صَدَقَۃٍ اَوۡ نُسُکٍ ۚ  فَاِذَاۤ اَمِنۡتُمۡ ٝ  فَمَنۡ تَمَتَّعَ بِالۡعُمۡرَۃِ اِلَی الۡحَجِّ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡہَدۡیِ ۚ  فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ فِی الۡحَجِّ وَسَبۡعَۃٍ اِذَا رَجَعۡتُمۡ ؕ  تِلۡکَ عَشَرَۃٌ کَامِلَۃٌ ؕ  ذٰلِکَ لِمَنۡ لَّمۡ یَکُنۡ اَہۡلُہٗ حَاضِرِی الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ  وَاتَّقُوا اللّٰہَ وَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ٪

 

অনুবাদ: আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব ওমরাহ পরিপূর্ণ ভাবে পালন কর। যদি তোমরা বাধা প্রাপ্ত হও, তাহলে কোরবানীর জন্য যাকিছু সহজলভ্য, তাই তোমাদের উপর ধার্য। আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুন্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবাণী যথাস্থানে পৌছে যাবে। যারা তোমাদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়বে কিংবা মাথায় যদি কোন কষ্ট থাকে, তাহলে তার পরিবর্তে রোজা করবে কিংবা খয়রাত দেবে অথবা কুরবানী করবে।

 

আর তোমাদের মধ্যে যারা হজ্জ্ব ওমরাহ একত্রে একই সাথে পালন করতে চাও, তবে যাকিছু সহজলভ্য, তা দিয়ে কুরবানী করাই তার উপর কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা কোরবানীর পশু পাবে না, তারা হজ্জ্বের দিনগুলোর মধ্যে রোজা রাখবে তিনটি আর সাতটি রোযা রাখবে ফিরে যাবার পর। এভাবে দশটি রোযা পূর্ণ হয়ে যাবে।

 

এ নির্দেশটি তাদের জন্য, যাদের পরিবার পরিজন মসজিদুল হারামের আশে-পাশে বসবাস করে না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। সন্দেহাতীতভাবে জেনো যে, আল্লাহর আযাব বড়ই কঠিন।

(আল বাকারা – ১৯৬)

 

কোরবানী নিয়ম সংক্রান্ত আয়াত

 

وَلِکُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلۡنَا مَنۡسَکًا لِّیَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ عَلٰی مَا رَزَقَہُمۡ مِّنۡۢ بَہِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ؕ  فَاِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ فَلَہٗۤ اَسۡلِمُوۡا ؕ  وَبَشِّرِ الۡمُخۡبِتِیۡنَ ۙ

 

অনুবাদ: আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাক এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও । (আল হাজ্জ্ব – ৩৪)

 

কোরবানীর ইতিহাস সংক্রান্ত আয়াত

 

فَلَمَّا بَلَغَ مَعَہُ السَّعۡیَ قَالَ یٰبُنَیَّ اِنِّیۡۤ اَرٰی فِی الۡمَنَامِ اَنِّیۡۤ اَذۡبَحُکَ فَانۡظُرۡ مَاذَا تَرٰی ؕ قَالَ یٰۤاَبَتِ افۡعَلۡ مَا تُؤۡمَرُ ۫ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ مِنَ الصّٰبِرِیۡنَ

অনুবাদ: অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখিযে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন। (আস ছাফ্‌ফাত – ১০২)

 

তাকওয়া সংক্রান্ত আয়াত

 

لَنۡ یَّنَالَ اللّٰہَ لُحُوۡمُہَا وَلَا دِمَآؤُہَا وَلٰکِنۡ یَّنَالُہُ التَّقۡوٰی مِنۡکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ سَخَّرَہَا لَکُمۡ لِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ ؕ وَبَشِّرِ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

 

অনুবাদ: এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।(আল হাজ্জ্ব – ৩৭)

 

হযরত ইব্রাহিমের পরীক্ষা সংক্রান্ত আয়াত

 

وَفَدَیۡنٰہُ بِذِبۡحٍ عَظِیۡمٍوَتَرَکۡنَا عَلَیۡہِ فِی الۡاٰخِرِیۡنَ ۖ سَلٰمٌ عَلٰۤی اِبۡرٰہِیۡمَ

کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ

অনুবাদ:আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু। আমি তার জন্যে এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি যে, ইব্রাহীমের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

(আস ছাফ্‌ফাত ১০৭–১১০)

 

 

কোরবানী সংক্রান্ত হাদীস

 

ঈদুল আযহা সম্পর্কে হাদীস

 

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন আমাকে কোরবানির দিবসে ঈদ (উদযাপনের) আদেশ করা হয়েছে । আল্লাহ তা এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন ।

এক ব্যক্তি আরজ করলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ । আমার কাছে শুধু একটি মানিহা থাকে (অর্থাৎ যা আমাকে কাছে শুধু দুধ পানের জন্য দেওয়া হয়েছে) আমি কি তা কোরবানি করতে পারি ? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন না । তবে তুমি চুল নখ কাটবে এবং নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করবে । এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে ।

(সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৫, সুনানে নাসায়ী ২/১৭৯ )

 

কোরবানির পশু সংক্রান্ত হাদীস

 

হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুটি সাদা কালো বর্ণের ( বড় শিং বিশিষ্ট) নর দুম্বা কোরবানি করেছেন । আমি নিজে দেখেছি তিনি দুম্বা দুটির গর্দানে পা রেখে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর বললেন । অতঃপর নিজ হাতে যবেহ করলেন ।

( সহীহ বুখারী ২/৮৩৪; সহীহ মুসলিম ২/১৫৫-১৫৬)

 

কোরবানির স্থান সংক্রান্ত হাদীস

 

হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসে আছে । নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরবানির স্থানে এলেন এবং নিজ হাতে ৬৩ টি উট নাহর করলেন।

(সহীহ মুসলিম ১/৩৯৪; সুনানে আবু দাউদ ১/২৬২ )

 

গরু সংক্রান্ত কোরবানির হাদীস

 

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ হতে গরু দ্বারা কুরবানী করেছেন ।

( সহীহ বুখারী ২/৮৩৪; ১/২৩১ )

 

সাত ভাগে কোরবানীর হাদীস

 

গরু ও উঠে ৭ শরিক হতে পারে । হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন , আমরা হজের ইহরাম বেঁধে রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর সাথে বের হলাম । তিনি আমাদেরকে আদেশ করেন যেন আমরা প্রতিটি উট ও গরুতে সাতজন করে শরিক হয়ে কোরবানি করি । ( সহীহ মুসলিম ১/৪২৪ )

অন্য আরেক বর্ণনায় আছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন (একটি) গরু সাতজনের পক্ষ হতে এবং ( একটি) উট সাত জনের পক্ষ থেকে কুরবানী করা যায় । (সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৮ )

 

কোরবানীর পশুর বয়স সংক্রান্ত হাদীস

 

হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা (কুরবানীতে ) মুছিন্না ছাড়া যবেহ করবে না । তবে সংকটের অবস্থায় ৬ মাস বয়সী ভেড়া দুম্বা জবাই করতে পারবে ‌‌। ( সহীহ মুসলিম ২/১৫৫ )

 

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কোরবানির উট অন্তত পাঁচ বছর বয়স হতে হবে । গরু-মহিষ দুই বছর এবং ছাগল ভেড়া ১ বছর হতে হবে । ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে উপরোক্ত হাদীস থেকে জানা গেল যে তার ছয় মাসের হলেও চলবে।

 

যে পশু দ্বারা কোরবানী হবে না

 

হযরত বারা ইবনে আযিব রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু কোরবানির পশু সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত দিয়ে দিয়ে ইশারা করেছেন ,আমার হাত তো তার হাত থেকে ছোট এবং বলেছেন , চার ধরনের পশু দ্বারা কুরবানী করা যায় না ।

১. যে পশুর এক চোখের দৃষ্টিহীনতা স্পষ্ট ২. যে পশু অতি রুগ্ন

৩. যে পশু সম্পূর্ণ খোড়া

৪. যে পশু এতো শীর্ণ যে তার হাড়ে মগজ নেই ‌।

লোকেরা বলল আমরা তো দাঁত কান লেজ ত্রুটিযুক্ত প্রাণী (দ্বারা কুরবানী করা) অপছন্দ করি । তিনি বললেন যা ইচ্ছা অপছন্দ করতে পারো । তবে তা অন্যের জন্য হারাম করো না ।

( সহীহ ইবনে হিব্বান ৫৯১৯ আরো দেখুন : সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৭; সুনানে নাসায়ী ২/২০২; জামে তিরমিযী ১/২৭৫ )

 

কোরবানির পশুর ত্রুটি সংক্রান্ত হাদীস

 

হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আদেশ করেছেন , আমরা যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান ভালোভাবে লক্ষ্য করি এবং ওই পশু দ্বারা কুরবানী না করি যার কানের অগ্রভাগ বা পশ্চাদ্ভাগ কর্তিত । তদ্রুপ যে পশুর কান ফাড়া বা কানে গোলাকার ছিদ্র যুক্ত ।

(সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৮; সুনানে নাসায়ী ২/১৮০; সুনানে তিরমিযী ১/২৭৫; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৭ )

 

সিং ভাঙ্গা কান কাটা পশু সংক্রান্ত হাদীস

 

হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আমাদের শিংভাঙ্গা বা কানকাটা পশু দ্বারা কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন । (সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৭ )

 

ঈদের নামাজের পর কোরবানীর হাদীস

 

কোরবানির সময় হযরত বারা ইবনে আযেব রাযিআল্লাহু আনহু বলেন , নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের খুতবা দিলেন ।

তাতে বললেন আমাদের এই দিবসে প্রথম কাজ নামাজ আদায় করা । এরপর কোরবানি করা ।

সুতরাং যে এভাবে করবে তার কাজ আমাদের তরিকা মতো হবে (আর যে আগেই জবেহ করেছে তার কাজ তরিকা মতো হয়নি ‌।) অতএব তাঁর পরিবারের জন্য প্রস্তুতকৃত গোশত । আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত কোরবানির নয় ।

(সহীহ বুখারী ২/৮৩২; সহীহ মুসলিম ২/১৫৪; সহীহ ইবনে হিব্বান ৫৯০৭ )

অন্য হাদীসে আছে কোন কোন সাহাবী ভুলক্রমে ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করেছেন । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে পুনরায় কোরবানি করার আদেশ করেন ।

(সহীহ বুখারী ২/৮২৭; সহীহ মুসলিম ২/১৫৩; সহীহ ইবনে হিব্বান হাদীস : ৫৯১২, ৫৯১৩; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৭; সুনানে নাসায়ী ২/১৭৯)

 

কোরবানির ছুরি সংক্রান্ত হাদীস

 

হযরত শাদ্দাদ ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন আল্লাহ তা’আলা সকল কিছুর উপর অনুগ্রহকে অপরিহার্য করেছেন । অতএব তোমরা যখন হত্যা করবে তো উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করো‌ ।

যখন যবেহ করবে তো উত্তম পদ্ধতিতে যবেহ করো ।

প্রত্যেকে তার ছুরিতে শান দিবে এবং তার পশুকে শান্তি দিবে । (সহীহ মুসলিম ২/১৫২; সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৯; সুনানে নাসায়ী ২/১৮২; সুনানে তিরমিযী ১/২৬০; সুনানে ইবনে মাজাহ ২/২২৯)

 

কোরবানির গোশত রাখার হাদীস

 

হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম তিন রাত পর কোরবানির গোশত খেতে নিষেধ করেছিলেন । এরপর অবকাশ দিয়ে বললেন, যাও পাথেয় হিসেবে সঙ্গে নাও । এবং সংরক্ষণ করে রাখো । (সহীহ মুসলিম ২/১৫৮ উম্মুল)

 

কোরবানির চামড়া সংক্রান্ত হাদীস

 

হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমাকে তার কোরবানির উটের আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে বলেছিলেন । তিনি কোরবানির পশুর গোশত চামড়া ও আচ্ছাদনের কাপড় সদকা করতে আদেশ করেন ।

এর কোন অংশ কসাইকে দিতে নিষেধ করেন । তিনি বলেছেন আমরা তাকে তার পারিশ্রমিক নিজের পক্ষ থেকে দেব । ( সহীহ বুখারী ১/২৩২; সহীহ মুসলিম ১/৪২৩-৪২ ৪)

 

লিখনে: মাওলানা শরিফ আহমাদ

ঢাকা, বাংলাদেশ ।

ফেসবুকে আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷

 

1 thought on “কোরবানী সম্পর্কে কোরআনের আয়াত। কোরবানী সম্পর্কে হাদীস মাওলানা শরিফ আহমাদ”

Comments are closed.