বরিশাল মুলাদীতে ইমরানের খুনীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন–শীর্ষবার্তা

0 363

শীর্ষবার্তা ডেস্কঃ
বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত উত্তর বালিয়াতলী গ্রামে রাতে ফোন করে ডেকে নিয়ে খুন হওয়া ইমরান হোসেন বেপারীর হত্যায় জড়িত সকল খুনীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবিতে বুধবার সকালে আমানতগঞ্জ বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকার হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষ ৷

সফিপুর ইউনিয়নের সকল জনগণের ব্যানারে সকাল এগারোটার দিকে দীর্ঘ ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ৷ এতে অংশ নেয়া প্রতিবাদী জনতা ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই স্লোগানে কাঁপিয়ে তোলে এলাকা ৷ ‘খুনীরা বাইরে কেনো, প্রশাসন জবাব চাই’ এবং ইমরান হত্যায় জড়িতদের, অবিলম্বে ফাঁসি চাই’ সহ আরো স্লোগান তারা দিতে থাকেন ৷ অনেকে কিশোর তরুণও এই মানববন্ধনে অংশ নেয় ৷ তাদের হাতে শোভা পাচ্ছিলো হাতে লেখা প্লেকার্ড ৷ যাতে ইমরানের খুনীদের ফাঁসির দাবি তোলা হয়েছে ৷

প্রতিবাদী মানববন্ধনটি ফেসবুকে সরাসরি লাইভ সম্প্রচার করে নিহত ইমরানের চাচাতো ভাই শাকিল আহমাদ ৷ তার সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয় ৷ সে জানায়, ‘ইমরানের খুনীদের ফাঁসি দেখতে চায় জনগণ ৷ সবার একটাই কথা, এই কুরআন নাযিলের মাস, বরকতময় রমজানে একটা তাগড়া জোয়ান ছেলেকে কীভাবে খুন করতে পারে! কতটা পৈশাচিক ও নির্মমখুনীরা!! সুতরাং এই খুনীদের বেঁচে থাকার অধিকার নাই ৷ এরা ছাড়া পেলে সমাজে খুনের ঘটনা অহরহ চলতে থাকবে ৷’

মানববন্ধনে অংশ নেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আব্দুল মালেক বেপারী ৷ তিনি অবিলম্বে খুনীদের ফাঁসি চেয়ে বক্তব্য রাখেন ৷ এছাড়া নিহিত ইমরানের বাবা বয়োবৃদ্ধ আলতাফ বেপারীও বক্তব্য রাখেন ৷ ছেলে হারানোর শোকে তিনি পাগলপ্রায় ৷ কথা বলতে গিয়ে কান্নায় মুষড়ে পড়েন ৷
তিনি বলেন, এই নির্মম হত্যাকান্ড খুনী যুবরাজের পক্ষে একা সম্ভব নয়। আরো খুনীরা তার সাথে জড়িত ছিলো ৷ আমি সব খুনীকে চিহ্নিত করে গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবি করছি।

ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুসা হিমু মুন্সী বলেন, পুলিশ মাত্র দুইদিনের ব্যবধানে চাঞ্চল্যকর ইমরান হত্যাকান্ডের মূলরহস্য উদ্ঘাটনসহ মূল ঘাতক যুবরাজ খলিফাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন সেজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই ৷ আমি আরো দাবী করছি অতি দ্রুত যেনো এই হত্যাকান্ডে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয় ৷ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য গত ২৯ এপ্রিল রাত এগারোটার দিকে ইমরান ফোন পেয়ে বাইরে বেরুলে আর ঘরে ফেরেনি ৷ যুবরাজ ও তার ৩-৪জন সহযোগীরা ইমরানের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে ইমরান দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও যুবরাজ ও তার সহযোগীরা তাকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে ইমরান একটি ফসলি ক্ষেতের মধ্যে পরে যাওয়ার পর যুবরাজ ও তার সহযোগীরা ইমরানকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ নাঈমুল হক জানান, ‘নিহতের পিতা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গত ৩০ এপ্রিল রাতে মুলাদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রধান হত্যাকারী যুবরাজকে গত ১ মে গ্রেফতারসহ হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাক্কু, রক্তমাখা জামা ও নিহত ইমরানের মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করেছে।

তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত যুবরাজ আদালতে হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

- Advertisement -