শরীয়তপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা! স্বামীর মৃত্যুদন্ড

মুহা.আবু সুফিয়ান আল মাহমুদ

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ­

শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ ভাসান চর গ্রামে যৌতুকের জন্য এক স্বামীকে স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। একই সাথে স্বামীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি রোজ সোমবার বিকাল আনুমানিক ০৪ টার দিকে শরীয়তপুর জেলার নারী নির্যাতন দমন আইন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুস সালাম এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ ভাসান চর গ্রামের সামাদ মৃধার ছেলে এবাদুল হক মৃধা (২৫)।



শরীয়তপুর পাবলিক প্রসিকিউটর পিপি মির্জা হযরত আলী বলেন, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করেছেন ঘাতক স্বামী এবাদুল হক মৃধা, আদালত যে রায় দিয়েছে আমরা এ রায়ে খুশি হয়েছি। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের চর চটাং গ্রামের খাদিজা আক্তার মধুর সঙ্গে একই উপজেলার দক্ষিণ ভাসান চর গ্রামের এবাদুল হক মৃধার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পরবর্তী সময়ে সংসার জীবনে এসে স্বামী এবাদুল হক তার স্ত্রী মধুকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের জন্য মারধোর করতেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে এসে ১৫ মে বিকেল আনুমানিক পাঁচটার দিকে মধুর বাবার বাড়ি থেকে ৬০,০০০ টাকা যৌতুকের জন্য মধুকে চাপ প্রয়োগ করেন স্বামী এবাদুল হক। মধু বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে স্ত্রী মধুকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন স্বামী এবাদুল হক। ঐদিন স্থানীয় থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মধুর মরদেহ উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

এ ঘটনায় নিহতের মধুর মা আমেনা বেগম (৫৬) পালং মডেল থানায় ০৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার ০১ নাম্বার আসামি নিহত মধুর স্বামী এবাদুল হক, ০২। ভাসুর শাহ আলম মৃধা, ০৩। দ্বীন ইসলাম মৃধা, ০৪। সাইদুল মৃধা, ০৫। শ্বশুর সামেদ মৃধা, ০৬। শাশুড়ি রেজিয়া বেগম এবং ০৭। রোজিনা বেগম এই ০৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত মধুর মা আমেনা বেগম। তদন্ত শেষে পালং মডেল থানার পুলিশ একজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে আদালতে ০৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ০৭ জন আসামির সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নিহত মধুর স্বামী এবাদুল হক এর অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মৃত্যুদণ্ড দেন এবাদুল হক কে, বাকি তিনজন আসামীর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেন আদালত।