সর্ম্পক
ফারহানা রহমান
৬৭ বছরের হাবিব সাহেব একজন রিটায়ার্ড সরকারি কর্মকর্তা, এখন উনার সারাদিন অখন্ড অবসর। এক সময়ের প্রচন্ড দাপুটে এবং সদা ব্যস্ত মানুষের কাছে সময় কাটানোটাই এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। যৌবনে ক্ষমতা আর টাকার পিছনে ছুটতে ছুটতে কখন যে নিজের স্ত্রী-সন্তানের সাথে সূক্ষ্ম একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে বুঝতেই পারেননি কখনো। আজ জীবনের অপরাহ্নে এসে বুঝতে পারছেন ক্ষমতা অথবা টাকা দুটোই একটা বয়সের পর আর রক্তে নেশা জাগাতে পারে না। তখন আপনজনদের ভালোবাসা-যত্নটাই সবচেয়ে মূল্যবান মনে হয়, সবাইকে পাশে পেলেই খুশিতে ভরে ওঠে হৃদয়। যৌবনে যেই উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলোকে পূরণ করতে গিয়ে আর সবকিছুকে উপেক্ষা করেছিলেন তিনি, আজ সেগুলোকেই খুব তুচ্ছ মনে হয় হাবিব সাহেবের কাছে। পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে ছুটতে গিয়ে না তিনি পরকালের কোনো পাথেয় জোগাড় করেছেন আর না নিজের পরিবারকে সময় দিয়েছেন। সন্তানরা এখন যে যার মতো ব্যস্ত, হাবিব সাহেবের স্ত্রীও ধর্মকর্ম আর নিজের বয়সজনিত অসুখ-ঔষধসহ তৈরি করে নিয়েছেন আলাদা জগত। হাবিব সাহেব তাই সবার মাঝে থেকেও নিজের বাড়িতে বড় একা। মাঝে মাঝেই অতীতের ঘটনাগুলোর স্মৃতিচারণ করে এক একা মুচকি হাসেন তিনি, হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোর কথা মনে করতে ভালোই লাগে হাবিব সাহেবের।
আরো পড়ুন – ভালো নেই পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা
- Advertisement -