আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা

 

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা । আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ । আশা করি সকলের সুস্থ এবং ভালো আছেন । আপনারা সুস্থ ও সুন্দর থাকুন এই কামনা করে শুরু করছি আজকের লেখাটি । আপনারা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন ৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস । আপনারা যদি এ দিবসে বক্তৃতা করতে চান তাহলে অবশ্যই ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে । প্রস্তুতি ছাড়া কোন কাজেই সফলতা পাওয়া যায় না ।

আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা

 

আর বক্তৃতার মত বিষয়টি তো পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া কখনোই ভালো করার সুযোগ নেই। তাই এখানে শিক্ষক দিবস সম্পর্কে কিছু বক্তব্যের ধারণা দেওয়া হল । এগুলো হুবহু কিংবা আগে পরে আরো কিছু শব্দ- কথা বাড়িয়ে আপনারা বক্তৃতা নোট তৈরি করুন । খুব ভালো বক্তৃতা করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ ।

আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা

 

বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম :

 

আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ । আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই আলোচনা সভার সম্মানিত সভাপতি, সুদক্ষ পরিচালক এবং আমার সামনে উপস্থিত সম্মানিত সুধীবৃন্দ । আপনাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ।

 

মূল বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম :

 

সম্মানিত সুধীবৃন্দ । প্রবাদ আছে শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড । কিন্তু এই মেরুদন্ড তৈরি করার প্রধান কারিগর হচ্ছেন শিক্ষক মহোদয়গণ । তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে গড়ে ওঠে শিক্ষিত সমাজ । জাতির ভবিষ্যৎ ‌‌। পিতা মাতা শুধু সন্তানকে জন্ম দিয়ে থাকে কিন্তু একজন শিক্ষক সেই সন্তানকে আদর্শ মানুষ ও নাগরিক করে গড়ে তোলে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা

আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা

একটা উদাহরণ দিয়ে আপনাদের বিষয়টা বুঝিয়ে বলি । বাজারে বিভিন্ন মোম রয়েছে । এই মোমবাতিগুলো নিজেকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিয়ে অন্যকে যেমন আলোকিত করে তদ্রূপভাবে শিক্ষক মহোদয়গণ নিজের রক্ত ঘাম পানি করে, নিজের মেধাকে খরচ করে অন্যের সন্তানদেরকে আলোকিত করে গড়ে তোলে ।

 

 

বক্তব্যের মাঝে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ :

 

সম্মানিত সুধীবৃন্দ । আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন ইসলাম ধর্মে শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । পৃথিবীর বুকে সর্বপ্রথম কোরআনের নাযিল হওয়া সূরা আলাকের পাঁচটি আয়াতের প্রথম আয়াতে ই পড়ার কথা বলা হয়েছে । বলা হয়েছে পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন । ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও শিক্ষক হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরিত হয়েছিলেন ।

আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা

তিনি নিজে স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, আমি তোমাদেরকে আদব আখলাক শিক্ষা দেওয়ার জন্যই শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। শুধু তাই নয় শিক্ষা করা এবং শেখানোর কি ফজিলত তা তিনি স্পষ্ট আকারে বলে গেছেন । হাদীস শাস্ত্রের কিতাব গুলো দেখুন অসংখ্য প্রমাণ পেয়ে যাবেন । আমি সেগুলো উল্লেখ করে কথা দীর্ঘায়িত করতে চাই না ।

 

প্রিয় শ্রোতামন্ডলী ! একজন আদর্শ শিক্ষক শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসের বই পড়িয়ে চুপ করে থাকেনা । বরং তারা প্রত্যেকটি ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দিয়ে থাকেন । এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগান । গল্পে গল্পে শোনান পূর্বসূরী মনীষীদের বিখ্যাত সব গল্প । ক্লাসের মাঝে বিভিন্ন প্রশ্ন উত্তর করে বিজয়ীদেরকে পুরস্কৃত করেও উৎসাহিত করেন । প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিজের সন্তানের মত আপন মনে করে রুটিন তৈরি করার পরামর্শ দেন । সমাজের সৎ যোগ্য ও আদর্শ নাগরিক হতে যা যা প্রয়োজন সবকিছুর ব্যবস্থা তারা করেন । তাদের এই অবদান কোনোভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই ।

 

বক্তব্যের শেষ করার নিয়ম :

 

যুগে যুগে পৃথিবীতে যারাই সফল হয়েছে তারা সবাই শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নিয়ম তান্ত্রিক লেখাপড়ার মাধ্যমে বিখ্যাত হয়েছেন। শিক্ষকদের জীবন নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গল্প, উপন্যাস ,কবিতা গান ইত্যাদি । আপনারা নিশ্চয়ই কবি কাদের নেওয়াজের বিখ্যাত কবিতা শিক্ষকের মর্যাদা পড়েছেন । সেখানে আদর্শ শিক্ষাগুরু এবং আদর্শ শিক্ষার্থীদের চিত্র ফুটে উঠেছে । শিক্ষকদের জীবন কর্ম নিয়ে আরো এরকম যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষকের আদেশ মেনে নেওয়া একান্ত জরুরী ।

আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা

ইট তৈরি করার সময় মাটি যদি নির্ধারিত ফর্মার বাইরে চলে যায় তাহলে ভাল ইট কখনো হয় না। পরিনামে তাকে ব্যবহার করা হয় নোংরা স্থানে । তার নাম হয়ে যায় খোয়া । আর যে মাটি ‌কারিগরের ফার্মার আয়ত্তে থাকে সে ভাল ইট হয় ।তার মূল্য থাকে এবং সে ভালো স্থানে ব্যবহৃত হয় । তদ্রূপভাবে শিক্ষার্থীরা যদি শিক্ষকের কথা কে গুরুত্ব দিয়ে জীবন সাজায় তাহলে অবশ্যই তারা দামি এবং সফল বলে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ ।

আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য 

 

তাই এ বিষয়ে শিক্ষার্থী‌ ও অভিভাবকদের সতর্ক দৃষ্টি আকর্ষণ করবো । আর হ্যাঁ শিক্ষকদের কিছু দুর্বলতা অবশ্যই আছে । সেগুলোকে কাটিয়ে উঠতে হবে বিভিন্ন কৌশলে । যুগ অনুযায়ী হতে হবে আরো সচেতন । আরো উদ্যমী ।‌‌ আরো পরিশ্রমী । আরো কৌশলী । তাহলে তাদের হাতেই গড়ে উঠবে আগামী প্রজন্মের শিক্ষিত জাতি । প্রতিষ্ঠিত হবে সত্যি সোনার বাংলাদেশ । সবাই ভাল থাকুন । সুস্থ থাকুন। শিক্ষকদের সম্মান ইজ্জত বহাল রাখুন । এই বলে আমি আমার সংক্ষিপ্ত কথা শেষ করছি । আল্লাহ হাফেজ ।