আন্তর্জাতিক হাফেজ হওয়ার উপায়

আন্তর্জাতিক মানের হাফেজ হওয়ার উপায়

 

 

আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ । কেমন আছেন বন্ধুরা । আশা করছি আপনারা ভাল এবং সুস্থ আছেন । আপনারা সবসময় ভালো থাকুন এই কামনা করি আল্লাহর কাছে । তো বন্ধুরা আজকের আলোচ্য টপিকের উপর আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছি । চলুন আলোচনা শুরু করি । আলোচনা সহজে বোঝার জন্য ৭টি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করছি ।

১. হাফেজ কি ও কেন

২. হাফেজ হওয়ার লাভ?

৩. হিফজের জরুরী পরিভাষা

৪. কোরআন মুখস্থের সহজ উপায় ?

৫. কলেজ ছাত্ররা কিভাবে কোরআন মুখস্ত করবে ?

৬.নারীরা কিভাবে ঘরে বসে কোরআন মুখস্ত করবে ?

৭. আন্তর্জাতিক হাফেজ হওয়ার উপায় ।

 

হাফেজ কি ও কেন ?

 

হাফেজ একটি আরবী শব্দ । শব্দটির অর্থ হচ্ছে সংরক্ষণকারী । সাধারণত ৩০ পারা কোরআন যার মুখস্থ আছে তাকে হাফেজ বলা হয় । মূলত হাফেজ শব্দটি হাদীস শাস্ত্রে বেশি ব্যবহৃত হতো । যার কমপক্ষে এক লক্ষ হাদীস মুখস্ত থাকতো তাকে হাফিজুল হাদীস বলা হত । আর কোরআন সংরক্ষণকারী কে হ্যামিল বলা হতো ।

আন্তর্জাতিক হাফেজ হওয়ার উপায়

যুগের প্রেক্ষাপটে কুরআন মুখস্তকারী হাফেজ নামে প্রসিদ্ধ হয়েছে সারা বিশ্বে । আর হাফেজে কুরআন অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বেশি ।

এ দেশে হাজার হাজার মাদ্রাসা রয়েছে। প্রতি বছর মাদ্রাসাগুলোর মাহফিলে শত শত হাফেজকে পাগড়ি ও সনদ প্রদান করা হয়। এত হাফেজ থাকা এটা এ দেশের গৌরব । বহির্বিশ্বে প্রতিটি হিফজুল কুরআনে প্রথম, দ্বিতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করে এটাই বারবার প্রমাণ করে । হাজার হাজার হাফেজে কুরআন, লক্ষ লক্ষ বিজ্ঞ আলেম-ওলামা ও বুজুর্গদের পদভারে মুখরিত এই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে নিজেকে ধন্য মনে করি । অজান্তে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা বেরিয়ে আসে আলহামদুলিল্লাহ । ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ ।

 

হিফজের জরুরী পরিভাষা

 

পৃথিবীর সবকিছু সুন্দরভাবে করার জন্য যেমন নিয়ম- নীতি আছে তদ্রুপ ভাবে যারা হাফেজ হন তাদের জন্য কিছু নীতিমালা আছে । হাফেজ সাহেবরা পুরো কোরআনকে সাতটি পর্যায়ের মাধ্যমে মুখস্থ করে থাকেন । সেই পরিভাষাগুলো হচ্ছে ।

হিফজখানার পরিভাষা

১. নাজেরা

 

নাজেরা মানে হচ্ছে দেখে দেখে পড়া । নাজেরার ছাত্ররা মূলত সবার আগে পবিত্র কোরআনকে একদম সহীহ ভাবে দেখে শেখার চেষ্টা করে । এই ক্লাসের নামই হচ্ছে নাজেরা বিভাগ । এখানে অভিজ্ঞ শিক্ষকগণ দেখে দেখে কোরআন শিক্ষা দেন । তাজবীদ সম্পর্কে সঠিক ও স্বচ্ছ ধারণা দেন । এই বিভাগ থেকে ছাত্রদের কে দ্রুত পড়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হয় । কেননা অল্প সময়ে হাফেজ হওয়া নির্ভর করে নাজেরা বিভাগের উপর ‌।

 সবক

 

সবক মানে হচ্ছে প্রথম বার যেই পড়াটা মুখস্থ করা হয় । আরো সহজ কথায় বললে সবক হচ্ছে নতুন পড়া । এই সবক পড়ার নির্ধারিত সময় হচ্ছে মাগরিবের পর থেকে নিয়ে এশা পর্যন্ত । এজন্য অনেক মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদে এশার নামাজ একটু বিলম্বে পড়া হয় ।

যেন ছাত্ররা সুন্দর করে সবক শেষ করতে পারে । আর এই সবক ছাত্ররা ভোররাতে অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সময় ওঠে ওস্তাদকে শুনিয়ে দেয় ।

 

সাত সবক

 

সাত সবক হচ্ছে নতুন করে যে সবকগুলো পড়া হয়েছে সেগুলো নিয়মিত পড়ে‌ আবার নিয়ম করে শুনানো । তবে হাফেজে কুরআনের যেহেতু ২০ পৃষ্ঠায় ১ পারা হয় তাই অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকের জন্য ২০ পৃষ্ঠা করে শোনাও অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । তবে নিয়ম করে অন্তত ৭ পৃষ্ঠা শুনিয়ে অন্য পারা যেতে হয় । এইজন্য এই নিয়মকে সাত সবক করা হয়েছে ।

 আমুখতা

 

আমুখতা হচ্ছে সাত সবকের আগের পড়াগুলো । যেগুলো সবক এবং সাত সবক পড়া শেষ করা হয়েছে।

এগুলো আবার নিয়ম করে উস্তাদ কে দশ পৃষ্ঠা করে দৈনিক শোনাতে হয় । আর এটা জন্য সময় হচ্ছে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত । এরপর আর‌ আমুখতা শোনা হয় না । কেননা পিছনের পড়া পড়তে ওস্তাদগণ তাকিদ দিয়ে থাকেন।

 

সবিনা

 

সবিনা হচ্ছে সাপ্তাহিক একটি পড়ার অনুষ্ঠান । সেদিন যা যত পারা মুখস্ত করা হয়েছে সেটা সারাদিনে একে অপরকে শোনাবে । কেননা এতগুলো ছাত্রের এতগুলো পড়া শোনা সম্ভব নয় । এজন্য শিক্ষক দুজনকে নির্বাচন করে দিবে আর তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একে অন্যকে পালাক্রমে শোনাবে । এটাই হচ্ছে সবিনা ।

 

নামাজের পড়া

 

ছাত্রদের মুখস্থ করা পারাগুলো সহজে মনে রাখার জন্য , ঝরঝরে এবং বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর করার জন্য , আল্লাহ তাআলার প্রিয় হওয়ার জন্য নামাজের মধ্যে সেগুলো পড়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ছাত্ররা ঠিক তাই করে । আর এজন্যই হয়তো তারাবির নামাজে গরগর করে সবাই তেলাওয়াত করে যেতে পারে।

 

প্রশ্নোত্তর পর্ব

 

এই পর্বে সম্মানিত শিক্ষকগণ বিভিন্ন আয়াত বা পৃষ্ঠার নাম করে পড়তে বলেন ‌। আয়াতে মুতাশাবিহাত জিজ্ঞাসা করেন ‌। কিংবা শিক্ষক তার প্রতিভার আলোকে প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে তার ছাত্রদেরকে যোগ্য করে গড়ে তোলেন

একজন হাফেজের  সম্মান ও মর্যাদাঃ

 

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা একটি ইবাদাত । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কুরআনে কারীম তেলাওয়াত সর্বোত্তম ইবাদাত । ( সহীহ বুখারী ) আর হাফেজ হওয়া পরম আরো সৌভাগ্যের বিষয় ।

 

কেননা কুরআন মুখস্থ করার জন্য নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকীদ দিয়েছেন । কোরআন মুখস্থ করার জন্য অনেক ফজিলতের কথা বলেছেন । তাই হাফেজগণ দুনিয়ার বুকে একমাত্র সেলিব্রেটি । তাদের সম্পর্কে চারটি হাদীস শুনুন ।

 

১. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কোরআনের হাফেজ পাঠক- সম্মানিত লিপিকার ফেরেশতার মতো । খুব কষ্টদায়ক হওয়া সত্বেও যে বারবার কোরআন মাজীদ পাঠ করে সে দ্বিগুণ সব পাবে । ( সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৯৩৭ )

২. হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন হাশরের মাঠে হাফেজে কুরআন কে বলা হবে পড় এবং উপরে ওঠো । তারতীলসহ পড় অর্থাৎ ধীরে ধীরে আবৃতি করো যেমন দুনিয়াতে করতে । কারণ সর্বশেষ আয়াতের স্থান হবে তোমার মর্যাদার স্থান । ( আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৬৪)

৩. হযরত আবু উমামা বাহিলী রদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কোরআন তেলাওয়াত করো । কারণ কোরআন কেয়ামতের দিন তার পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে । ( সহীহ মুসলিম‌ )

৪. হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করল এবং আমল করল আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন । এবং তাকে তার বংশধর হতে এমন দশজনকে সুপারিশ করার সুযোগ দান করবেন তাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গিয়েছিল । ( জামে তিরমিযী, হাদীস নং ১১৪ )

 

কোরআন মুখস্থ করার সহজ উপায় !

 

ছোটবেলায় কোরআন মুখস্থ করা অতি সহজ । মুখস্ত রাখাও সহজ হয়ে যায় ।‌ কিন্তু যতই বয়স বাড়তে থাকে দিন- দুনিয়া, জগৎ পরিবার , বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদির ঝামেলা আসতে থাকে । তখন মুখস্থ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । তবুও চেষ্টা অব্যাহত রাখলে মুখস্থ করা যাবে ইনশাআল্লাহ । নিচের নিয়মগুলো ফলো করুন ।

 

১. আপনার মেধা অনুযায়ী ১/২ পৃষ্ঠা মুখস্থ করার আগে বারংবার সেটা নাজেরা পড়ুন ‌। কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ বার।

২. বাদ মাগরিব ওই নির্ধারিত পৃষ্ঠাটি আরো কয়েকবার পড়ুন । অতঃপর প্রথম আয়াতকে শব্দে শব্দে ভেঙ্গে মুখস্থ করার চেষ্টা করুন । যেমন

( اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ . اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ . اَلۡحَمۡدُ لِلّٰه. )

এভাবে এই অংশটুকু বারবার পড়ুন । এটা মুখস্ত হয়ে গেলে পরবর্তী অংশ পড়ুন ।

رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ . رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ . رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ .

এবার প্রথম এবং দ্বিতীয় অংশ একত্রে মিলিয়ে বারবার পড়ুন।

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ. اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ . اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ

 

এভাবে প্রথম আয়াত মুখস্ত হলে দ্বিতীয় আয়াত মুখস্ত করুন । প্রথম আয়াতের মত ভেঙ্গে ভেঙ্গে ।

الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ. الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ. الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ

এটা মুখস্থ হয়ে গেলে প্রথম এবং দ্বিতীয় আয়াত একত্রে বার বার পড়ুন ‌।

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ. الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ.

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ. الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ.

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ. الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ.

এভাবে পুরো পৃষ্ঠা মুখস্ত করুন । এ নিয়মে মুখস্ত রীতি চলবে । দ্রুত পড়া মুখস্থ হবে এবং মনে থাকবে ইনশাআল্লাহ ।

 

৩. ঘুমানোর আগে দুই রাকাত সালাতুল হাজত নামাজে মুখস্থ করা ও পৃষ্ঠাটি ধীরে সুস্থে পড়ে নামাজ শেষ করতে হবে। ‌ এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নত নফল নামাজের ভিতরে উল্লেখিত পৃষ্ঠাগুলো বেশি করে পড়তে হবে ।

 

৪. রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে কিংবা ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের সময় ওই পৃষ্ঠা পড়ার চেষ্টা করতে হবে।

 

৫. সবশেষের ধাপ হচ্ছে ঐ পৃষ্ঠাটি কয়েকবার পড়ে ক্লিয়ার করে উচ্চস্বরে তারতীলের সাথে উস্তাদকে শোনাবেন ‌।

 

৬. নারীরা ঘরে বসে কোরআন মুখস্থ করবে কিভাবে ?

 

পুরুষের চেয়ে নারীরা পবিত্র কুরআন হিফজ করার ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যাওয়া সম্ভব ‌। কেননা পুরুষরা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে বেশি । তাদের অবসর সময় কয় । নারীদের হাতে যথেষ্ট সময় থাকে । এই সময়ের মধ্যে তাদের একান্ত ইচ্ছা হলে এবং আল্লাহপাকের রহমতে পবিত্র কুরআন হিফয করতে পারেন । জন্য নিচের নিয়মগুলো ফলো করুন ।

 

১. প্রথমে নিয়ত করুন

প্রথমে আপনি নিয়ত ঠিক করেন । যা কখনো ভাববেন না যে আপনার দ্বারা কুরআন মুখস্থ করার কাজটি সম্পন্ন করা যাবে না । মানসিক এবং শারীরিক প্রস্তুতি নিয়ে কায়দা, আমপারা শেষ করে নাজেরা দ্রুত করুন ।

২. সময় নির্ধারণ করুন

পবিত্র কোরআন আত্মস্থ করার জন্য নির্ধারিত সময়ে তৈরি করার বিকল্প নেই । যেসব নারী স্কুল কলেজে পড়াশোনা কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকেন তাদের জন্য সময় নির্ধারণ করে পবিত্র কুরআন মুখস্থ করা খুব জরুরি । অতএব যে যার অবস্থান থেকে উত্তম সময় বের করতে পারেন । তবে আমি সাজেস্ট করব তাহাজ্জুদের উঠে মুখস্ত করতে পারেন অথবা প্রত্যেক ফরজ নামাযের পরে । বিশেষ করে এশা এবং ফজরের নামাজের পরে মুখস্থ করার অভ্যাস করতে পারেন ।

 

৩. কিভাবে কোরআ মুখস্ত করবেন ?

এই টপিকে এই প্রবন্ধে আলোচনা করা হয়েছে । সহজে কুরআন মুখস্ত করার উপায় ফলো করুন ।

 

৪. আপনি আপনার ফ্যামিলির সবার সাথে পরামর্শ করে কাজ করুন । যদি সুযোগ হয় কোন ভাল হাফিজার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন । তাকে নিয়মিত সবক শোনান । সরাসরি সুযোগ না হলে অন্তত ইমো, মেসেঞ্জার গ্রুপ তৈরি করেও শোনাতে পারেন ‌। এভাবে আরো কিছু নিয়ম ফলো করলে আশা করি যে কোন মহিলা পবিত্র কুরআন হেফয করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

 

 

আন্তর্জাতিক হাফেজ হওয়ার উপায়

 

১. আপনি নিজে যদি আন্তর্জাতিক হাফেজ হতে চান কিংবা আপনার সন্তানাদি বা প্রিয়জনকে আন্তর্জাতিক হাফেজ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে প্রথম থেকে শারীরিক এবং মানসিক প্রস্তুতি নিন ।

 

২. নিয়ত পাক্কা করে ভালো মানের কোন‌ হিফজ বিভাগে ভর্তি হয়ে যান । আরো দশজনের লেখাপড়ার খোঁজখবর নিন ।

 

৩. যারা ইতোপূর্বে আন্তর্জাতিক হাফেজ হতে পেরেছেন তাদের তেলাওয়াত শুনুন । জীবনী পড়ুন এবং তাদের চেয়ে বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন দেখুন ।

 

৪. মুরুব্বী উস্তাদকে খুব ফলো করুন । তাদের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করুন । তাদের থেকে দুআ নিন । প্রিয়জনকে দুআ করতে বলুন ।

 

৫. আল্লাহর কাছে হাত তুলে কিংবা নামাজে সেজদারত অবস্থায় নিজের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য দুআ করুন ‌।‌ কান্নাকাটি করুন । স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য কোরআন হাদীসে বর্ণিত দোয়া পড়ুন । দেখবেন আল্লাহ আপনাকে আন্তর্জাতিক হাফেজ বানিয়ে দিবেন।

 

 

 

 

 

 

 

কলেজ ছাত্ররা কিভাবে কুরআন মুখস্ত করবে ?

 

১. কলেজ ছাত্ররা পবিত্র কুরআন মুখস্থ করার জন্য প্রথমেই শুদ্ধ তেলাওয়াত শিখে নিবেন । তারপর হাফেজী কোরআন সংগ্রহ করবেন। ‌ হাফেজী কোরআনের সাথে অন্য কুরআনের পার্থক্য হচ্ছে

হাফেজী কোরআনের প্রতিটি পৃষ্ঠায় আয়াত শেষ হয়।

প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় ১৫ টি করে লাইন থাকে আর প্রতিটি পারায় পাতা থাকে দশটি করে অর্থাৎ ২০ পৃষ্ঠা।

এরকম সুন্দর সিস্টেমে অন্য কোরআন শরীফে থাকে না । এজন্য হাফেজি কুরআন সংগ্রহের কথা বললাম । যদি কোরআনুল কারীম সব সময় সঙ্গে রাখার সহজ না হয় তাহলে প্লে স্টোর থেকে হাফেজী কোরআন ডাউনলোড করে দিন । ( কোন অ্যাপটি ভাল হবে জানতে হলে পোষ্টের নিচে কমেন্ট করুন )

 

২. প্রত্যেকটি লাইন নাজেরার শেষে ভেঙ্গে ভেঙ্গে আয়াতটি ১০ বার করে পড়ুন । তারপর নিজে নিজে তার পুনরাবৃত্তি করুন । প্রথম আয়াতে মুখস্ত হয়ে গেলে দ্বিতীয় আয়াত ভেঙ্গে ভেঙ্গে মুখস্ত করে প্রথম আয়াত এর সঙ্গে কানেকশন করুন ।

 

৩. পবিত্র কোরআন দেখে দেখে পড়ুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি লাইনগুলোর উপর আঙ্গুল রেখে পড়েন । এটি আপনার মাথায় গেঁথে যাবে । সহজে আর ভুলবেন না ইনশাআল্লাহ ।

 

৪. টার্গেট ঠিক করে পড়া শুরু করুন । যদি আপনি প্রতিদিন মাত্র ৫ লাইন মুখস্ত করেন তবে মাত্র পাঁচ বছরে পুরো কুরআন মুখস্থ করা সম্ভব । সাধারণ রীতি অনুযায়ী মুখস্থ শুরু করলে আপনি পাঁচ দিনে পাঁচ আয়াতের বেশি মুখস্থ করতে পারবেন । সেক্ষেত্রে তিন থেকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই পবিত্র কোরআনের হাফেজ হতে পারবেন ।

 

৫ . একজন যোগ্য হাফেজের সঙ্গে সম্পর্ক রাখুন । তার পরামর্শ নিন । তাকে নিয়মিত সবক শোনার চেষ্টা করুন । তাহলে আপনার মুখস্ত করার ক্ষেত্রে গতি আসবে এবং পিছনের সবক ভুলবেন না ।

 

শেষকথাঃ

 

আন্তর্জাতিক হাফেজ হওয়ার উপায় নিয়ে অনেক কথাই হলো। আজকের মত এখানেই শেষ করতে চাচ্ছি ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শীর্ষবার্তার সাথেই থাকুন

 

লিখেছেনঃ

মাওলানা শরিফ আহমাদ 

আলেম,কবি ও আলোচক ।