নিজামীর কবরের নামফলক থেকে ‘শহীদ’ শব্দ মুছে দিলো ছাত্রলীগ | শীর্ষবার্তা

জামায়াতের সাবেক আমির ও চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী কথিত যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর কবরের নামফলক থেকে শহীদ শব্দটি মুছে দিয়েছে সাঁথিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার রাতে সাঁথিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল খান সানা তার সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের মনমথপুর কবরস্থানে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর নামফলকে থাকা শহীদ শব্দটি মুছে দেয়।

ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল খান সানা জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া মতিউর রহমান নিজামীর অনুসারীরা অনেকদিন ধরেই সোশাল মিডিয়ায় নিজামীকে শহীদ হিসেবে প্রচার করে আসছে। এতে শহীদ শব্দটির অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে । বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে ধোপাদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নিজামীর নিজগ্রাম মনমথপুর গোরস্থানে তার নামফলক থেকে শহীদ শব্দটি মুছে দেওয়া হয়। স্থানীয় এমপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. শামসুল হক টুকুর নির্দেশে তারা এ কাজ করেছেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার জানান, মতিউর রহমান নিজামী দুটি মামলায় (মানবতাবিরোধী অপরাধ ও আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা) মৃত্যুদণ্ড কার্যকরী হয়। সে দেশের প্রথমসারির একজন স্বাধীনতাবিরোধী। যারা ধর্মযুদ্ধ ও দেশের জন্য প্রাণ দেন তারা শহীদ খেতাব পান। সে হিসেবে নিজামীর নামের পূর্বে শহীদ শব্দটি ব্যবহার করা যায় না।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আ. লতিফকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।

বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির ডা. আব্দুল বাসেতের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি এ কাজের তীব্র নিন্দা জানান।

উল্লেখ্য, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ১৯৯১ এবং ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে (পাবনা-১) এমপি নির্বাচিত হন। চারদলীয় জোট সরকারের সময় তিনি কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালের ১১ ই মে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জামায়াত নেতা বলেন, সম্পূর্ণ সাজানো মামলায় অবৈধভাবে ফাঁসি দিয়েছে নিজামীকে ৷ তার অপরাধ তিনি বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র করার চেষ্টা করেছেন ৷ ইসলামী আন্দোলন করাই তার দোষ ৷ রাজনৈতিক কারণেই তাকে বিচারিক হত্যা করা হয়েছে ৷ সুতরাং তিনি শহীদ হয়েছেন ৷ আল্লাহর দরবারে আমরা বিশ্বাস করি তিনি শাহাদাতের মর্যাদা পাবেন ৷ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা একজন মৃত ব্যক্তির কবরের নামফলককেও ভয় পাচ্ছে ৷ নিজামীরা এ দেশে ইসলামী আন্দোলনের প্রেরণা হয়ে থাকবেন ৷
এমডিএমডি

Leave a Comment