বিনা উস্কানিতে বিজিবি ও পুলিশের নৃশংস গুলি চালানো এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

বিনা উস্কানিতে বিজিবি ও পুলিশের নৃশংস গুলি চালানো এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
……………………………………………….
ঢাকা ২৮ মার্চ
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দ তাদের শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনা উস্কানিতে বিজিবি ও পুলিশের নৃশংস গুলি চালানো এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালনের পর আজ সন্ধ্যায় পল্টনস্থ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কার্যালয়ে এক জণাকীর্ণ প্রেস ব্রিফিংয়ে হেফাজত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম এই নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী এবং ‘গুজরাটের কসাই’ হিসেবে কুখ্যাত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর গৌরবময় আয়োজনে অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে আমাদের যৌক্তিক অবস্থান ও কর্মসূচি ছিল। যে কর্মসূচিতে সকল দেশপ্রেমি তৌহিদী জনতার সর্বাত্মক সমর্থনও ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি সুন্দরভাবে পালনের স্বার্থে আমরা কোনোরকমের সহিংস কর্মসূচি দেওয়া থেকে বিরত ছিলাম। কিন্তু নিদারুণ ক্ষোভের সাথে বলতে হয়, গত ২৬ মার্চ দিনভর দেশপ্রেমি জনতার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশ ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের জঘন্য হামলায় পাঁচজন হেফাজত কর্মী শাহাদাত বরণ করেন। আহত হন অসংখ্যজন। হাটহাজারী, বি.বাড়িয়া, ঢাকার যাত্রাবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় মাদ্রাসায় ঘেরাও করে হামলা চালানো হয়।
এর প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ বাধ্য হয়ে ২৭ মার্চ বিক্ষোভ ও ২৮ মার্চ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি আহ্বান করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২৭ মার্চের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় সরকার দলীয় ছাত্র ও যুব সংগঠনের সদস্যরা বিনা উস্কানীতে হামলা চালায়। বিশেষ করে বি. বাড়িয়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্য উবাইদুল মুকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে এক মাদরাসায় হামলা চালালে সেখানে তৎক্ষণাৎ চারজন সহ পরবর্তীতে মোট ৮টি তাজা প্রাণ ঝরে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন মাদরাসায় ও সাধারণ কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা ও হুমকি প্রদান করে।
আজও (২৮ মার্চ) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি চলাকালে আমাদের শান্তিপূর্ণ পিকেটিং এর সময় বহু জায়গায় সরকার দলীয় ছাত্র ও যুব সংগঠনের সদস্যরা আমাদের কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এবং পুলিশ বিনা উস্কানীতে হেফাজত নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করে এবং তাদেরকে গ্রেফতার করে। এভাবে দুই দিনের কর্মসূচিতে ১৭ জনের অধিক নিহত হয় এবং ৫০০ জনেরও অধিক আহত হয়। পুলিশ ২০০ এরও অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। সরকারদলীয় লোকদের তাণ্ডব আর পুলিশী হামলার পরও আমাদের নেতা-কর্মীদেরকে আমরা শান্ত রাখার চেষ্টা করেছি।
এহেন পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের দাবী ও কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
সরকারের নিকট দাবী:
ক. পুলিশ, বিজিবি ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত শহীদদের ক্ষতিপূরণ এবং খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
খ. আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

কর্মসূচি:
ক. আগামীকাল ২৯ মার্চ হেফাজতের উদ্যোগে সারাদেশে দোয়ার কর্মসূচি পালন করা হবে।
খ. আগামী ২ এপ্রিল শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ।
আমাদের উল্লেখিত দাবী সরকার বাস্তবায়ন না করলে আমরা আরো কঠিন থেকে কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা ফজলুর রহমান কাসেমী, মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন রাজি, মাওলানা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ হাসান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, মাওলানা মূসা বিন ইজহার, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা মুহিব খান, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা শরীফুল্লাহ, মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, অধ্যাপক আব্দুল জলিল, মাওলানা আবু তাহের খান, মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান, মাওলানা জয়নুল আবেদীন, মাওলানা মাওলানা আব্দুল মুমিন, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা শরীফ হুসাইন প্রমুখ।
বার্তা প্রেরক
(মুফতি মুহাম্মদ আবদুল মুমিন)
প্রচার সম্পাদক
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগর
মোবাইল : ০১৯৭৯-৩৫৯৩৫৯