দার্শনিকের বৃদ্ধিমান চাকর

দার্শনিকের বুদ্ধিমান চাকর

মহিউদ্দিন বিন্ জুবায়েদ

এক ছিল দার্শনিক।
প্রমাণ ছাড়া কোন জিনিস বিশ্বাস করতো না।কিন্তু খুব শিকার প্রিয় ছিলো। মাঝে মাঝে পাখি শিকারে বের হতো।বন বাদাড়ে, খালে বিলে, নদী নালা  হাওড়ে ঘুরে বেড়াতো। নানা জাতের পাখি শিকার করতো। তবে বক ছিল তার কাছে খুব প্রিয় এবং স্বাদের পাখি।

একদিন পাখি শিকার করতে নদীর চরে গেলো। নানা জাতের পাখির সাথে একটি সাদা বকও শিকার করলো। দার্শনিক তার নিজস্ব ডাকবাংলোতে থাকতো। চাকর তার রান্না বান্নার করতো। দার্শনিক তাকে শিকারে বের হলে সাথে নিয়ে যেতো।

শিকার করা পাখিগুলো চাকরের হাতে দিয়ে দার্শনিক বললো,  সাদা বকটি আমার জন্য আস্তা পাকাবে। দেহের কোন অংশ আলাদা করবে না।

চাকর দার্শনিকের জন্য রান্না করছে।
এমন সময় তার এক বন্ধু ডাকবাংলোতে এলো। বক রান্না করছে দেখে বললো, বন্ধু অনেক দিন থেকে বকের একটি ঠ্যাং খাওয়ার খুব ইচ্ছে করছিল। তুমি যদি আমার ইচ্ছাটা পূরণ করতে? বন্ধুর ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়ে বকের একটি ঠ্যাং চাকর কেটে তাকে খেতে দিয়ে বিদায় করে।

দার্শনিক খাবার টেবিলে আসে।
চাকর সব খাবার টেবিলে সাজায়। বকের রোস্টের দিকে দার্শনিকের নজর পড়ে। প্লেটে বকের এক ঠ্যাং। চাকরকে বলে, আস্তা বক পাকাতে বলছি , বকের এক ঠ্যাং কেন? আরেক ঠ্যাং কই?

চাকর ছিল খুব চালাক।
বুদ্ধি করে বলে, বকের তো ঠ্যাং একটিই থাকে।  দার্শনিক রাগ হয়। বলে, প্রমাণ দিতে হবে। চাকর রাজি হয়। পরদিন চাকর দার্শনিককে নদীর চরে নিয়ে যায়।
এসময় একটি বক নদীর ধারে মাছ ধরবার জন্য এক ঠ্যাং পাখার ভিতরে এবং অপর ঠ্যাং কাদায় রেখে মাছ ধরবার  ধ্যান করছে। একেবারে মৌন ধ্যান।

চাকর বকটিকে লক্ষ্য করে দার্শনিককে দেখায়। দেখুন, বকের এক ঠ্যাং। দার্শনিক দেখে আসলেই তো বকের এক ঠ্যাং!
হঠাৎ মানুষের আওয়াজ পেয়ে বক ধ্যান ভেঙে উড়াল দেয়। পাখার ভিতর থেকে আরেকটি ঠ্যাং বের হয়ে পড়ে।

দার্শনিক বলে,  ওই তো … বকের ঠ্যাং দুইটা। চাকর জবাবে বলে, হ্যাঁ । বকের দুই ঠ্যাং থাকে উড়ার সময়। কিন্তু খাবারে টেবিলে থাকে এক ঠ্যাং। চাকরের বুদ্ধির কাছে হেরে যায় দার্শনিক।

Leave a Comment