মাসুদ সাইদীর ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগ্রহীতঃ
এবার যাকাতের ৫ লক্ষ টাকা আত্নসাতের মামলা … !!!!
আজ সকাল সাড়ে ৯টায় পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে আমার পরম শ্রদ্ধেয় পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ২টি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়েছিলো। এর একটি মামলা হলো বিশেষ জজ আদালত ১ এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালতে যাকাতের ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের (!!!!!!!!!) মামলা আর অপরটি হলো বিশেষ জজ আদালত ৩ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক নজরুল ইসলামের আদালতে আয়কর ফাঁকির (!!!!!!!!!) মামলায় তাকে হাজির করা হয়েছিলো।
•• প্রথম মামলাটির অভিযোগ :
আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগ হলো, তিনি নাকি ২০০৪ সালে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত যাকাতের ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন (!!)।
•• মামলাটির বিষয়ে আমার বক্তব্য :
প্রকৃত বিষয় হলো- ২০০৪ সালে পিরোজপুরের ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্র নামের একটি সামাজিক সংগঠন অসহায় দুঃস্থ মানুষদের সাহায্য করার লক্ষ্যে ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক অনুদান চেয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। সেই আবেদন তৎকালীন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহান মঞ্জুর করার পর ইসলামী ফাউন্ডেশন পিরোজপুরের ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের নামে ৫ লক্ষ টাকার একটি চেক ইস্যু করে তা পিরোজপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করে। জেলা প্রশাসক উক্ত চেক গ্রহনের পর চেকটি ইসলামী ফাউন্ডেশনের পিরোজপুর এর পরিচালক লুৎফুল হক ও ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের কাছে হস্তান্তর করে। উক্ত চেকটি ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্র তাদের নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে জমা করে। এরপর ইসলামী ফাউন্ডেশনের পিরোজপুর এর পরিচালক ও ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের সভাপতি উভয়ে মিলে ঐ ৫ লক্ষ টাকা বিতরণের জন্য তালিকা তৈরী ও চূড়ান্ত করে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পের উপর প্রতিজনকে ৫০০০ টাকা করে মোট ১০০জন দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের নাম লিপিবদ্ধ করে। পরবর্তীতে তালিকাভুক্ত ঐ ১০০জন মানুষ রেভিনিউ স্ট্যাম্পের উপর স্বাক্ষর করে প্রতিজন ৫০০০ টাকা করে গ্রহণ করে। টাকা বিতরণ শেষে ৩০০ টাকার ঐ স্ট্যাম্পে ইসলামী ফাউন্ডেশনের পিরোজপুর এর পরিচালক লুৎফুল হক ও ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন উভয়ে স্বাক্ষর করে তা আবার জেলা প্রশাসকের কাছে অর্থ বিতরণের তালিকা বুঝিয়ে দেন। এতো স্বচ্ছভাবে সব টাকা বিতরণের পরেও অভিযোগ তোলা হয়েছে ‘যাকাতের টাকা নাকি আত্নসাৎ করা হয়েছে (!)। অথচ, টাকা প্রাপ্তি থেকে নিয়ে শুরু করে বিতরণ পর্যম্ত উপরোক্ত কোনো ঘটনার সাথেই আল্লামা সাঈদীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই বা তিনি জড়িতও ছিলেন না। তার একটাই অপরাধ ছিলো যে, তিনি উক্ত ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্র ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে অনুদানের টাকা পাওয়ার জন্য যে আবেদন করেছিলো তিনি সেই আবেদনে পিরোজপুরের এমপি হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। এই সুপারিশ করার মহা অপরাধে (!!!) বলা হচ্ছে ‘আল্লামা সাঈদী যাকাতের ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন (!!!???)।
•• দ্বিতীয় মামলাটির অভিযোগ :
আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগ হলো, তিনি নাকি ২০০১ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যম্ত এই ১০ বছরে ৪৬ লক্ষ টাকার আয়কর ফাঁকি (!!!!!!) দিয়েছেন।
•• দ্বিতীয় মামলাটির বিষয়ে আমার বক্তব্য :
প্রকৃত বিষয় হলো- আল্লামা সাঈদী একজন নিয়মিত আয়কর দাতা। ২০০১ থেকে ২০১০ সালেও তিনি আয়কর দিয়েছেন। শুধু তাই-ই নয় তিনি কারাগারে থাকাবস্থায় গত ১০ বছর ধরেও আয়কর দিয়ে যাচ্ছেন। আল্লামা সাঈদীকে আয়কর ফাঁকির বিষয়ে কোন রকমের নোটিশ না দিয়ে অথবা আয়কর দিতে কোনো ভুল হয়ে থাকলে সে বিষয়ে আইন অনুযায়ী সংশোধনের কোনো সুযোগ না দিয়ে শুধুমাত্র হয়রানী ও চরিত্রহননের হীন উদ্দেশ্যে এনবিআর ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকির মামলা দায়ের করে। মামলা করার পর আল্লামা সাঈদী আত্নপক্ষ সমর্থন ও আয়করের হিসাব নিয়ে এবং আয়কর প্রদানে কোথায় অসংগতি তা জানার লক্ষ্যে এনবিআরের সঙ্গে বসার জন্য ২০১১ সালেই আইন অনুযায়ী আবেদন করেছিলেন। এনবিআর আল্লামা সাঈদীর সে আবেদন নিষ্পত্তি না করে সে আবেদন ঝুলিয়ে রেখেই মামলা পরিচালনা করছে।
৮২ বছর বয়স্ক আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েও এই সরকারের মনে প্রশান্তি আসেনি। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একজন জ্ঞানবৃদ্ধ আলেম এর চরিত্রহনন ও জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করার হীন উদ্দেশ্যেই সরকার এসব মামলা দায়ের ও পরিচালনা করছে বলে আমি মনে করি।
আমার কথা পরিস্কার –
ইনশাআল্লাহ, এমন হাজারো ষড়যন্ত্র করে কোরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীকে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবেনা। জনগনের হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যাবেনা। জনগনকে বিভ্রান্ত করাও যাবেনা। কারন, আল্লামা সাঈদী ও জনগন- একে অপরের পরিপূরক