হেফাজত নেতা মাওলানা জসিম উদ্দিনকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের পরিচয় প্রকাশের দাবীতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ লালবাগ জোনের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত



গত ৯ই ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টায় নিজস্ব কর্মস্থল লালবাগ জামেয়া কোরানিয়া আরাবিয়া থেকে বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব ও লালবাগ জামেয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা জসিম উদ্দিন। লালবাগ থেকে রিকশায় উঠে কিছুদূর যেতেই পেছন থেকে দৌড়ে এসে পিঠে ছুরিকাঘাত করেই পালিয়ে যায় হামলাকারী। ঘটনার একদিন পর নিজেই বাদি হয়ে লালবাগ থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন মাওলানা জসিম উদ্দিন।

ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, হামলাকারী টার্গেট করে শুধুমাত্র মাওলানা জসিম উদ্দিনকে ছুরি মারার উদ্দেশ্যেই সেখানে আসে। ফুটেজে ধরা পড়া হামলাকারীর এক সহযোগীকে একদিন পর পুলিশ গ্রেফতার করলে সে জানায় তারা বেশ কয়েকদিন ধরেই মাওলানা জসিমের ওপর হামলার জন্য তাকে অনুসরণ করছিল।

হামলার পর থেকে টানা আট ঘন্টা রক্তক্ষরণ হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ডাক্তার মাওলানা জসিমের জীবন নিয়ে আশংকার কথা জানাচ্ছিলেন বারবার। আটঘন্টা পর বিভিন্ন ঔষধের মাধ্যমে রক্তক্ষরণ কমিয়ে আনা সম্ভব হলে অপারেশন শুরু করা সম্ভব হয়। দেড় ঘন্টার সফল অপারেশনের পর ডাক্তার জানায় ক্ষত অনেক বেশি গভির ছিল। তবে ছুরি চালানোর ধরণ দেখে মনে হয়েছে হার্ট বা কিডনি টার্গেট করা হয়েছিল। বেশ লম্বা জায়গা নিয়ে ছুরির পোজ দিলেও আল্লাহর অশেষ কৃপায় একটুর জন্য হার্ট বা কিডনিতে ছুরির আঁচড় পড়েনি৷ যদি একটুও আঁচড় পড়তো তাহলে আর মাওলানা জসিমকে বাচানো সম্ভব হত না।

ডাক্তারের বর্ণনা থেকে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে এটি একটি টার্গেট কিলিংয়ের পরিকল্পনা ছিল। অন্যদিকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীকে শনাক্ত করা হয়। প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণ উভয়ের ভাষ্যমতে হামলাকারী একজন পেশাদার খুনি। টাকা পয়সার বিনিময়ে সে এ ধরণের কন্ট্রাক্ট নিয়ে থাকে। এলাকায় এই কাজের জন্য সে পরিচিত।

গত পরশু শেষরাতে হামলাকারীকে দক্ষিণখান থেকে গ্রেফতার করে লালবাগ থানার পুলিশ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে গ্রেফতারের খবর এসেছে।
কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরও এখনো মূলহোতাদের পরিচয় প্রকাশ করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন।

হামলাকারীকে গ্রেফতারের পরদিন কোর্টে ওঠানো হলেও রহস্যজনকভাবে তার রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। লালবাগ থানার দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আসামী গ্রেফতার হওয়ার পর থানায় পুলিশের কাছে হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের পরিচয় প্রকাশ করেছে। তাই রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু গ্রেফতারের পর দুইদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মূলহোতাদের পরিচয় প্রকাশ করছেনা।

হামলার ঘটনার পর পেরিয়ে গেছে এক সপ্তাহ। এরপরও প্রশাসনের এহেন আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক।
কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় মাওলানা জসিম উদ্দিনকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের বাচিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা মেনে নেওয়া হবেনা। তাই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের পরিচয় প্রকাশের দাবীতে আজ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ লালবাগ জোন থেকে মানববন্ধন করেছে৷ অনতিবিলম্বে যদি মাওলানা জসিম উদ্দিনকে হত্যার প্রচেষ্টাকারী মূলহোতাদের পরিচয় প্রকাশ করা না হয় তাহলে তৌহিদী জনতাকে দমিয়ে রাখা যাবেনা। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃত্বে সারাদেশে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়বে।



সভাপতিত্ব করেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব, মাওলানা মূসা বিন ইজহার।
প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক মুফতি বসিরুল হাসান।
উপস্থিত ছিলেনঃমাওলানা সাইফুল্লাহ হাবিবী।
মাওলানা নাসিরউদ্দিনের।
মাওলানা আবু তাহের।
মাওলানা সানাউল্লাহ খান।
মাওলানা জুবায়ের।
মাওলানা রকিবুল্লাহ হাবিবী
মাওলানা ইরফান মাওলানা কাউছার সহ হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ।