পরিবর্তন ও উন্নয়নের মাধ্যমে আধুনিক নাগেরপাড়া ইউনিয়ন গঠন করতে চাই – মোজাম্মেল হক সরদার

জনতার চেয়ারম্যান পর্ব – ০২

 

 

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০২১ কে সামনে রেখে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল “শীর্ষবার্তা ডটকম” চালু করত যাচ্ছে “জনতার চেয়ারম্যান” নামের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার পর্ব। যেখানে দেশের বিভিন্ন জেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য   চেয়ারম্যান পদপার্থীদের জনতার মুখমুখি করা হবে। জনতার পক্ষে থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হবে পার্থীদের।
.



“জনতার চেয়ারম্যান” এর আজকের পর্বে আমরা মুখমুখি হয়েছি শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোজাম্মেল হক সরদারের ৷

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ কেমন আছেন?

মোজাম্মেল হক সরদারঃ হ্যাঁ, ভাল আছি ।আলহামদুলিল্লাহ ৷

জনতার চেয়ারম্যান পর্ব ০২

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ আপনার পারিবারিক স্টাটাস সম্পর্কে জানতে চাই ৷

 

আরো পড়ুন – অনলাইনে ইনকাম ২০২১ – ঘরে আয় করার সহজ উপায়!

মোজাম্মেল হক সরদারঃ বাবা মরহুম মাওলানা আব্দুল জব্বার ৷ বড় কালীনগর ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। মা মরহুমা মালিকা বেগম গৃহিনী ছিলেন।

২ ভাই ৩ বোন আমরা ৷ বড় ভাই জাকির হোসেন টুনু ২০১২ সালে মারা গেছেন।  আমার ২ মেয়ে ১ ছেলে বড় ভাইর ১ ছেলে ১ মেয়ে। আমি ব্যাবসায়ী।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ সংক্ষেপে আপনার শিক্ষাজীবন নিয়ে বলুন ৷

মোজাম্মেল হক সরদারঃ নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পাশ করি ৷ সরকারী নাজিম উদ্দিন কলেজ, মাদারীপুর থেকে করি এইচ এস সি ৷ তেজগাঁ কলেজ ঢাকা থেকে বি. এ পাস করি।
.

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ সমাজকল্যাণে আপনার অবদান কী?

.

মোজাম্মেল হক সরদারঃ আমি ছোটকাল থেকেই সমাজ কল্যাণমূলক কাজের সাথে জড়িত। সমাজ উন্নয়নের জন্য সব সময় কাজ করতে চেষ্টা করি ৷ এস এস সি পাসের পরেই প্রতিভা ক্রীড়া সংঘ নামে এক টা ক্লাব করি।আমি সেই ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি।নাগেরপাড়া ইউনিয়নে প্রথম রেজিস্ট্রেশনধারী ক্লাব এটি ৷

আমি এইচ এস সি পাসের পরে ঢাকায় বসবাসরত নাগেরপাড়ার সমমনা বন্ধুদের নিয়ে গঠন করি ব্রাদার্স সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আমি ব্রাদার্স সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলাম। এই ব্রাদার্স সোসাইটির মাধ্যমে বড়কালী নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশ বছর ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই বিতরণ এর ব্যবস্থা করেছি ৷ সরকার বই বিতরণের পূর্ব পর্যন্ত।

.

এলাকার গরীব মানুষদের সব সময় আমার সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করে আসছি। আমি বর্তমানে আলোকিত নাগেরপাড়ার আহবায়ক ৷

.

করোনাকালীন সময়ে আলোকিত নাগেরপাড়ার মাধ্যমে নাগেরপাড়ার গরীব অসহায় মানুষদের মধ্যে আমাদের সাধ্যমত ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগতভাবে গরিব মানুষের সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। এছাড়া আমি ব্যক্তিগতভাবে নাগেরপাড়া ইউনিয়নের যেকোনো অনুষ্ঠানে সাধ্যমত সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
.

পড়ুন – ­জনতার­ চেয়ারম্যান পর্ব – ০১ 

 

আমি বর্তমানে নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও বড় কালিনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী সদস্য।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ নাগেরপাড়া ইউনিয়ন নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি?

.

মোজাম্মেল হক সরদারঃ

পরিবর্তন ও উন্নয়ন”
আধুনিক নাগেরপাড়া ইউনিয়ন আমার লক্ষ ও উদ্দেশ্যে ৷

নুতন কিছু করতে হলে পরিবর্তন আনতে হয়। আর পরিবর্তন আনতে পারলেই উন্নয়ন করা সম্ভব।
তাই পরিবর্তন ও উন্নয়ন এই স্লোগান কে সামনে রেখে আমি নাগেরপাড়াকে ঢেলে সাজানোর জন্য চেষ্টা করব। আপনারা জানেন বর্তমান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার ইচ্ছা গ্রাম হবে শহর। গ্রামে বসে শহরের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে। সর্বোপরি নাগেরপাড়াবাজার উন্নয়নের ব্যাপারে, নাগেরপাড়ার ভালোর ব্যাপারে, নাগেরপাড়ার আধুনিকায়নের ব্যাপারে আমার সকল চেষ্টা থাকবে ৷
.

আগামী কিছুদিনের মধ্যেই পদ্মাসেতুর কাজ সমাপ্ত হবে ইনশাআল্লাহ ৷ পদ্মা সেতুর কাজ সমাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে সমস্ত শরীয়তপুর উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি আমাদের নাগেরপাড়া ইউনিয়নের যথেষ্ট উন্নয়ন হবে ৷ আমরা নাগেরপাড়া থেকে ঢাকায় সকালে  আসব এবং  সকল  কাজ কর্ম শেষ করে বিকালে আবার বাড়ি ফিরব।
আমি চেয়ারম্যান হতে পারলে নাগেরপাড়া ইউনিয়নের সকল জনগনের আধুনিক জীবন যাপনের যে সুবিধা গুলি থাকার কথা তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।

যেকোনো উপায়ে নাগেরপাড়া  ইউনিয়ন কে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা করব।

.

নাগেরপাড়া ইউনিয়নে যতগুলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে আমি যদি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারি প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  দিকে আমার নজর থাকবে শিক্ষার মানের ব্যাপারে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে ভালো রেজাল্ট করে সে ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং শিক্ষকমন্ডলী ও  ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে আমি মিটিং  করব।

সর্বোপরি নাগের পাড়ার উন্নয়নের ব্যাপারে নাগেরপাড়াকে আধুনিক ইউনিয় হিসাবে গড়ে তোলার ব্যাপারে আমি চেষ্টা করব। কথা দিতে পারি আমার পক্ষে নাগেরপাড়া ইউনিয়নের কোন ভাবেই খারাপ কিছু করা সম্ভব নয়।
.

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ জনগণ কেন আপনাকে নির্বাচিত করবে?

.

মোজাম্মেল হক সরদারঃ আমি মনে করি নাগেরপাড়া ইউনিয়নবাসি একজন শিক্ষিত ভদ্র মার্জিত প্রতিনিধি চান। যিনি নাগেরপাড়া ইউনিয়নের উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারবেন।
.

তাই আমার বিশ্বাস সকল যোগ্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে আমাকে প্রিয় নাগেরপাড়া ইউনিয়নের জনগন বেছে নিবেন এবং আমাকে নির্বাচিত করবেন।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ আপনার নির্বাচনী ইশতেহার কী?

.

মোজাম্মেল হক সরদারঃ আমার নির্বাচনী ইশতেহার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের সকল জনগন ও সাংবাদিক ভাইদের দাওয়াত দিয়ে নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে ঘোষণা করব ইনশাল্লাহ।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ অন্যসব প্রার্থী থেকে আপনার স্বাতন্ত্র্য কী?

.

মোজাম্মেল হক সরদারঃ এটা একটি কঠিন প্রশ্ন তবে এতটুকু বলতে পারি, নাগেরপাড়া ইউনিয়নের জনগন এর জবাব ভোটের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করে দিবেন ইনশাল্লাহ।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাই ৷ নামকরণ ও ঐতিহ্য ৷

.

মোজাম্মেল হক সরদারঃ ইতিহাস সমৃদ্ধ সারা শরীয়তপুরে যে কয়টা ইউনিয়ন আছে নাগেরপাড়া ইউনিয়ন তার মধ্যে অন্যতম। পঞ্চায়েত ৷ পরে প্রেসিডেন্ট ৷ তারপরে চেয়ারম্যান প্রথার জন্ম হয়।
বিজ্ঞ লোকের সমন্নয়ে এই সব পদে অভিজ্ঞরা ছিলেন।
শিক্ষা দীক্ষায় সারা শরীয়তপুরে নাগেরপাড়া ইউনিয়নের শুনাম আছে।
বিশেষ করে নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। বড় কালী নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

.
বড়কালী নগর ফাজিল মাদ্রাসা ও ঢালীর হাট ফাজিল মাদ্রাসার ইতিহাস শরীয়তপুর জেলায় উল্লেখযোগ্য।

সরকারী বড় পদে নাগেরপাড়ায় উল্লেখ যোগ্য ব্যাক্তি আছেন। রষ্ট্রদূত, সচিব, কর কমিশনার, ইঞ্জিনিয়ার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা, ব্যাংক কর্মকর্তা, উকিল ব্যারিস্টারএবং  ব্যবসায়ী উল্লেখ যোগ্য। যা নাগেরপাড়াকে ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

নামকরণঃ নাগেরপাড়া ইউনিয়নটি একটি প্রাচীন ইউনিয়ন। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন মুহূর্তে যখন ইংরেজদের আগমন প্রায় নিশ্চিত কথিত আছে যে, তখন বর্তমান গোসাইরহাট থানায় মূলগাও গ্রামটির নিকট ব্রহ্মনন্দ গিরি নামে এক সাধু বাস করতেন । লোক তাকে গোসাই নামে ঢাকতেন । স্থানীয় অনেকের ধারণা এ গোসাই হতেই গোসাইর হাট এবং  নাগেরপাড়া তাদের ব্যবসা ও নাগনাগিনির খেলা দেখাতেন ৷ ততকাল গোসাই নামের হিন্দু সাধকের আত্নিয় স্বজনরা দু এক জনের মতে নাগেরপাড়া তে গোসাই নামে যে সাধুর লোক জন বসবাস করতেন  তারা সাপ লালন পালন করতেন। সাপের খেলা দেখাতেন। সাপ কে নাগ বলা হয় ৷ এই কারণেও নাগেরপাড়ার নামকরণ হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ নির্বাচন করার চিন্তা মাথায় এলো কেন?

.

 

মোজাম্মেল হক সরদারঃ আমি বাংলাদেশের নাগরিক ।আর নাগেরপাড়ার সন্তান। নাগেরপাড়ার সন্তান হিসাবে নাগেরপাড়ার জন্য কিছু দায় আমার আছে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে। কিছু দায়িত্ব পালন করতে প্লাটফর্ম দরকার।
.

বাংলাদেশের প্রশাসানিক কেন্দ্রের মধ্য ইউনিয়ন পরিষদ হল প্রথম স্তর। এই স্তরের উন্নয়ন না হলে শেখ হাসিনার সরকারের গ্রাম হবে শহর এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হবে না।
সব কিছু বিবেচনা করে নাগেরপাড়ার জন্য ভালকিছু করার চিন্তা থেকেই নির্বাচন করার কথা মাথায় এসেছে।
.

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ নির্বাচনে আপনার বাজেট কত?
মোজাম্মেল হক সরদারঃ নির্বাচনী একটি আচরণবিধি আছে ৷ সেখানে বাজেটের কথাটা অবশ্যই আছে ৷

.

আমি চেষ্টা করব আচারন বিধি মেনে যে বাজেট তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ বর্তমান জনপ্রতিনিধির কাজে কী কী গ্যাপ লক্ষ করেছেন?
মোজাম্মেল হক সরদারঃ বর্তমান চেয়ারম্যানের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি ৷ কোন কাজেই শতভাগ  করা সম্ভব নয়। আমি গ্যাপ বলব না। আমি যদি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারি তার অসমাপ্ত কাজগুলো করার চেষ্টা করব ৷ পাশাপাশি সরকারের যে উয়িংগুলো আছে ইউনিয়ন পরিষদের জন্য  এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে নতুন নতুন প্রজেক্ট বের করে ইউনিয়নবাসীদের সেবা করার  চেষ্টা করব।

শীর্ষবার্তা ডটকমঃ সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ৷

মোজাম্মেল হক সরদারঃ আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। পাশে থাকবেন সব সময়।

 

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সাংবাদিক দীদার মাহদী