বাঁশগাড়ীতে ‘শান্তিনগর’ নামে একটি গ্রামের নামকরণ

বাঁশগাড়ির নতুন গ্রামের নামকরণ নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন হিলফুল ফুজুল উলামা ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি হাফেজ রিয়াজ মাহমুদ ৷

প্রিয় বাঁশগাড়ি ইউনিয়নবাসী
আসসালামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ

খুশির সংবাদ

আজকে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব একটি গ্রামের নতুন নামের সাথে ৷
আপনারা সকলে অবগত আছেন যে, বিগত ২০ থেকে ২২ বছর যাবত আড়িয়ালখাঁ নদীতে ভেঙ্গে সাবাড় করে দিয়েছে তিনটি গ্রাম ৷ যা হলো বাঁশগাড়ীর কিছু অংশ, আউলিয়ার চরের কিছু অংশ ও পালেরাবাদ গ্রাম ৷ কথায় আছে,

“নদীর এপার ভাংগে
ওপার গরে এইতো নদীর খেলা, সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যাবেলা ৷”

ঠিক সেভাবেই ভিটেমাটি গ্রাস করে
নিঃস্ব করে তাড়িয়ে দিলো ৷
আবার বছর কয়েক যেতে না যেতেই নদীর পশ্চিম পাড়ে জাগিয়ে দিল বিশাল বালু চর। আর সেই চর জাগার সুবাদে ভিটেবাড়িহারা লোকগুলো যার যার মতো করে নতুনভাবে বাড়ি করে ওই চরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বাঁধে । যে ছিল দূরের মানুষ সে হয়ে গেল কাছের ৷ আর কাছের মানুষগুলো হয়ে গেল দূরের । এভাবেই এক-দুটি ঘর, ঘর থেকে বাড়ি, বাড়ি থেকে রূপ নিল সুন্দর একটি গ্রাম ৷ বসোবাস করছে যে যার মতো করে।

আলহামদুলিল্লাহ খুশির বিষয় হলো,
এই মানুষগুলোর মাঝে নেই কারো সাথে হিংসা-বিদ্বেষ ৷ হানাহানি-মারামারি বা রক্তপাত।
ঘরে ঘরে জন্ম নিয়েছে হাফেজ, আলেম ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ-যুবকরা ৷ যাদের বুকে রয়েছে সমাজ, দেশ ও জাতির কল্যাণের সু-চিন্তা ধারা।

স্বাগতম জানাই এই আবাসভূমির আলেম, যুবক ও যুব সমাজকে ৷
যারা হবে জাতির আগাম যাত্রার হাল ধরার মাঝি।

প্রিয় পাঠক!
আপনি হয়তো এরই মাঝে জেনেছেন,
গত ১৫ ই মে ২০২১ইং রোজ শনিবার, হাফেজ রিয়াজ মাহমুদ এর আহবানে এলাকার সকল আলেমদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি সমাজকল্যাণমূলক সংগঠন ৷
যার নামকরণ করা হয় বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সংগঠনের নামের রূপ রেখায় ৷
“হিলফুল ফুজুল উলামা ফাউন্ডেশন”
(একটি অরাজনৈতিক জনকল্যাণমূলক সংগঠন)

হ্যাঁ ৷ বলেছিলাম তিনটি গ্রামের কথা ৷ যারা নদীভাঙনে পড়ে সব খুইয়ে আবার মিলিত হয়েছে এক মোহনায় ৷ থাকছে একসাথে ৷ তারা হারিয়ে ফেলেছে তাদের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম।

তাই বাঁশগাড়ী, আউলিয়া চর ও পালেরবাদ এই তিন গ্রামের লোকের স্বমন্বয়ে এই চর, বা গ্রামটি ৷
যদি এই এলাকাকে বলি বাঁশগাড়ী তা একাংশও নয় ৷ আর যদি বলি আউলিয়ার চর তাও সম্পূর্ণ নয় ৷ নয় পালেরাবাদও ৷ এই জায়গাটির স্থানীয় নামটি নদীভাঙনের সাথে সাথে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৷ সে কারণে গ্রামটির সঠিক নাম কেউ বলতে পারছে না ৷ যে যার মতো করে উপরেল্লিখিত তিনটি গ্রামের নামকে মন মতো ব্যবহার করছে ৷
সুতরাং তারা কী পরিচয় দিবে তাদের এলাকার? তাদের গ্রামের নাম তারা কী বলবে?

এ কারণেই ‘হিলফুল ফুজুল উলামা ফাউন্ডেশন’ যেদিন প্রতিষ্ঠিত হয়,
ঠিক সে দিন কমিটি গঠনের বৈঠকে সকল আলেম সমাজের স্বমন্বয়ে সবার পরামর্শ নিয়ে এরিয়াভিত্তিক অত্র গ্রামের নতুন নামকরণ করা হয় “শান্তিনগর বাঁশগাড়ী” নামে ৷

শান্তিনগর গ্রামের এরিয়া …
পূর্বে ~~মাতুব্বর বাড়ী
পশ্চিমে~~নতুন খাল (জামাই কান্দি)
উত্তরে ~~রেন্টি তলা,
দক্ষিনে~~আড়িয়ালখাঁ নদী।

প্রিয় পাঠক! সেই বৈঠকে অনেকেই অনেক নতুন নতুন নাম উপস্থাপন করেন ৷ পরিশেষে ‘শান্তিনগর’ নামটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।

বলে রাখা ভালো যে, শান্তিনগর নাম কেন গ্রহণ করা হলো? আসলে সকলেই এই বিষয়টা অবগত যে, অত্র এই গ্রামের চতুর্দিকে যে গ্রাম রয়েছে, সকল গ্রামেই মারামারি, হানাহানি, হত্যা, হামলা, মামলা খুন-জখম, বোম ইত্যাদি ছয়লাব করে আছে ৷
কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এই গ্রামের মানুষগুলো নির্বিগ্নে শান্তিতে জীবন যাপন করছে ৷ যার তুলনাই হয়না। সেই লক্ষ্যেই এই গ্রামের নামকরণ হলো শান্তিনগর বাঁশগাড়ি।
আল্লাহ আমাদের সকলকে সমাজের সকল শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার তৌফিক দান করুন আমিন।