শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত । শবে মেরাজের আমল। মাওলানা শরিফ আহমাদ

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
মাওলানা শরিফ আহমাদ

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ । জ্ঞানপিপাসু প্রিয় ভাই-বোনেরা । এই প্রবন্ধে আমি শবে মেরাজ সম্পর্কে আলোচনা করবো । ইনশাআল্লাহ । আশা করছি আপনারা মেরাজ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পাবেন । অতএব পুরো লেখাটি ধৈর্য্য সহকারে পড়ুন । আলোচনার সুবিধার্থে এবং আপনাদের সহজে বোঝার লক্ষ্যে কয়েকটি পর্বে ভাগ করে আলোচনা শুরু করছি ।

১.শবে মেরাজের অর্থ কি ? ২. শবে মেরাজ রজবের কত তারিখে ? ৩. শবে মেরাজ ২০২২ ইং ৪. ইসরা ও মেরাজ ৫. শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত ৬. শবে মেরাজের নামাজ ৭. শবে মেরাজের রোজা ৮. শবে মেরাজের আমল‌ ৯. শবে মেরাজের হাদীস ১০. শবে মেরাজ ও বিজ্ঞান ১১. শবে মেরাজের শিক্ষা ১২. শবে মেরাজের উপহার ১৩. শবে মেরাজের কবিতা ১৪. শবে মেরাজের উক্তি ও স্ট্যাটাস ।

 

১. শবে মেরাজের অর্থ কি ?

 

শব একটি ফারসী শব্দ । শব্দটির অর্থ রাত । মেরাজ একটি আরবী শব্দ । শব্দটি উরুজ শব্দ থেকে নির্গত । অরুজ অর্থ-ঊর্ধ্ব গমন করা । আর মেরাজ শব্দের অর্থ – ঊর্ধ্বে আরোহণের বাহন । আরেক অর্থ সিঁড়ি । আরবী এবং ফারসী শব্দ মিলিয়ে হয়েছে শবে মেরাজ । সুতরাং শব্দটির মিলিত অর্থ হচ্ছে ঊর্ধ্ব গমনের ‌রাত । শবে মেরাজের আরবী হলো লাইলাতুল মেরাজ ।

আরও পড়ুনঃ কসর নামাজের নিয়ম

 

২. শবে মেরাজ রজবের কত তারিখে ?

 

মেরাজের ঘটনা কখন সংঘটিত হয়েছিল এ ব্যাপারে বিভিন্ন রকম বর্ণনা পাওয়া যায় । তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে শুধু এতোটুকুই পাওয়া যায় যে , মেরাজের ঘটনা হিজরতের এক বা দেড় বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল । তবে কোন বছর, কোন মাসে ,কোন তারিখে হয়েছিল তার নির্ভরযোগ্য দলীল নেই ।
যদিও বা আমজনতার মধ্যে প্রসিদ্ধ হয়েছে মেরাজ রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাত । (আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়াহ ও শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়াহ খঃ৮ পৃঃ ১৮/১৯)

 

শবে মেরাজ ২০২২ ইং

 

দেশের আকাশে পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে । গত বৃহস্পতিবার ( ৩ ফেব্রুয়ারি ) থেকে রজব মাসের ১ তারিখ গণনা করা শুরু হয়েছে । সেই হিসেবে ২৮ ফেব্রুয়ারি হবে রজব‌ মাসের ২৬ তারিখ । আর সেই রাতেই পালিত হবে লাইলাতুল মেরাজ ।

গত ২ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

 

ইসরা ও মেরাজ

 

ইসরা শব্দের অর্থ রাত । পরিভাষায় ইসরা বলা হয় মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত রাত্রের ভ্রমণকে । আর মেরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্ব গমন । পরিভাষায় মেরাজ বলা হয় মসজিদে আকসা থেকে সিদরাতুলমুনতাহা ও ঊর্ধ্ব জগত ভ্রমণকে ।

ইসরা ও মিরাজের ঘটনা পবিত্র কুরআনে কারীমে এভাবে বলা হয়েছে-
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آَيَاتِنَا إِنَّه هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
অনুবাদ: পবিত্র ঐ মহান সত্ত্বা যিনি রাত্রি বেলায় তাঁর বান্দাকে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন । যার আশপাশকে আমি বরকতময় করেছি। এটা এজন্য যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাতে পারি। (সূরা বনী ইসরাইল , আয়াত নং-১)

 

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

 

ইসলাম ধর্মে চারটি রাতের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে । সেই রাত চারটি হচ্ছে-

১. শবে কদর
২. শবে বরাত
৩. দুই ঈদের রাত
৪. জুমআ রাত ।

এই চারটি রাতের বাইরে অন্যতম একটি রাত হচ্ছে মেরাজ । মেরাজ‌ রাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক । কেননা এই মেরাজের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের পাঁচটি ভিত্তির দ্বিতীয় ভিত্তি অর্থাৎ নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়েছে ।‌ এই রাতে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উপহারস্বরূপ এনেছেন ।

ইসলামের সঠিক ইতিহাস অনুযায়ী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়াতের দশম বছর ৬২০ খ্রিস্টাব্দে রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে কাবা শরীফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বাইতুল মুকাদ্দাস গমন করেন । এবং সেখানে তিনি সমস্ত নবী-রাসূলগণের জামাতে ইমামতি করেন । অতঃপর তিনি একে একে সমস্ত আসমান পারি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহায় গিয়ে পৌঁছেন । আরো সামনে অগ্রসর হয় আরশে আজীমে গিয়ে আল্লাহর দীদার লাভে ধন্য হন ।

এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি কোরআন এবং হাদীসের বর্ণনায় পাওয়া যায় । অতএব কোনভাবেই মেরাজকে অস্বীকার বা অবহেলা করার সুযোগ নেই ।

 

শবে মেরাজের নামাজ

 

শবে মেরাজের কোন নির্দিষ্ট নামাজ নেই । বিশেষ নামাজ-ই যখন নেই তাহলে নামাজের বিশেষ নিয়ম বা নিয়তের প্রশ্নটি অবান্তর ও অযৌক্তিক । বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন বইয়ে সালাতুর রাগায়েব নামক বিশেষ পদ্ধতির নামাজ পড়ার কথাগুলো জাল ও বানোয়াট ।

 

নিচের আরবী ইবারত লক্ষ্য করুন –

فلم يصح في شهر رجب صلاة مخصوصة تختص به و الأحاديث المروية في فضل صلاة الرغائب في أول ليلة جمعة من شهر رجب كذب و باطل لا تصح و هذه الصلاة بدعة عند جمهور العلماء و من ذكر ذلك من أعيان العلماء المتأخرين من الحفاظ أبو إسماعيل الأنصاري و أبو بكر بن السمعاني و أبو الفضل بن ناصر و أبو الفرج بن الجوزي و غيرهم إنما لم يذكرها المتقدمون لأنها أحدثت بعدهم و أول ما ظهرت بعد الأربعمائة فلذلك لم يعرفها المتقدمون و لم يتكلموا فيها و أما الصيام فلم يصح في فضل صوم رجب بخصوصه شيء عن النبي صلى الله عليه و سلم و لا عن أصحابه (لطائف المعارف،  ذكر ما يتعلق برجب من أحكام-131)

অনুবাদ: রজব মাসে বিশেষ কোন নামাজ প্রমাণসিদ্ধ নয় । রজবের প্রথম শুক্রবারে সালাতুল রাগায়েব এর ফজিলত সম্পর্কে হাদীসসমূহ বাতিল , মিথ্যা ও বানোয়াট । বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের মতে এটি একটি নব আবিস্কৃত নামাজ । পরবর্তী যুগে অগাধ জ্ঞানের অধিকারী বিদগ্ধ ওলামায়ে হক এটিকে বিদআত বলে আখ্যা দিয়েছেন । বিশেষ করে হযরত আবু ইসমাইল আনসারী , হযরত আবুবকর ইবনে সামআনী, আবুল ফজল ইবনে নাসের, আবুল ফরাজ বিন জাওযী রহ: প্রমুখ ।

 

শবে মেরাজের রোজা

 

রজব মাসের প্রথম তারিখ ও প্রথম শুক্রবার ১০ ও ১৫ এবং ২৭ তারিখে শবে মেরাজের রোজা রাখা সংক্রান্ত হাদিস গুলো জাল ও বানোয়াট ।

কেননা রজব মাসের রোজার বিশেষ ফজিলতের কথা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয় । কোন সাহাবিদের থেকেও প্রমাণিত নয় । (লাতায়েফুল মাআরিফ-১৩১)

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

অতএব শবে মেরাজের রোজা রাখার বিধান নেই । একান্ত যদি কারো রোজা রাখার ইচ্ছা থাকে তাহলে আইয়ামে বীযের রোজা রাখুন । আইয়ামে বীজ অর্থ উজ্জ্বল রাতের দিনগুলো । চন্দ্র মাসের ১৩,১৪,ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বীজ বলা হয় । হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু কর্তৃক বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসের শেষাংশে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন প্রতি মাসে তিনটি নফল রোজা রাখো । কেননা প্রত্যেকটি নেকী কমপক্ষে ১০ গুণ বর্ধিত করে দেওয়া হয় । এভাবে সারা বৎসর নফল রোজা রাখার সওয়াব হবে ।

( সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম )

আপনারা পড়ছেন  শবে মেরাজের আমল

হযরত আবু যর গিফারী রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত আছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আবূ যর ! প্রতি মাসে তিন দিন নফল রোজা রাখতে চাইলে ১৩,১৪ ও ১৫ এই তিন দিন রাখবে । ( জামে তিরমিজি ও নাসায়ী শরীফ )

 

শবে মেরাজের আমল ও দোয়া

 

মেরাজ রাতের নির্দিষ্ট কোন আমল ও দোয়া নেই ।‌ কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত যে কোন দোয়া করা যেতে পারে । ঐ রাতে করাটাও জরুরী নয় । তবে হ্যাঁ রজব- শাবান মাসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি দোয়া বেশি করে পাঠ করতেন । আর সেই দোয়াটি জয়ীফ হলেও জাল তথা বানোয়াট নয় । আর মুহাদ্দিসদের স্বীকৃত মতামত হল ফজিলতের ক্ষেত্রে জয়ীফ হাদিস আমলযোগ্য ‌। হাদীসটি দেখুন –

عن أنس قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل رجب قال اللهم بارك لنا في رجب وشعبان وبلغنا رمضان

হযরত আনাস রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‌ রজব মাস আসলে পড়তেন-আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শা’বানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদ্বান। (মু’জামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-৩০৯, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৬৪৯৪, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৫৩৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৩৪৬)

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

অতএব এই দোয়াটি সকাল-সন্ধ্যায় বেশি করে পাঠ করুন । কারো মনে এই প্রশ্নটি আসতে পারে

শবে মেরাজের কোন আমল নেই কেন ? প্রশ্নটির জবাব হচ্ছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শবে মেরাজে বিশেষ কোন আমল করেননি । করতে বলেননি । আর নবীজি যা করেননি, করতে বলেননি, কিংবা সমর্থন দেননি সেটা করাই তো হচ্ছে বিদআত । আর বেদআত হচ্ছে পথভ্রষ্টতা আর পথ ভ্রষ্টতা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত করে ।

 

 শবে মেরাজের হাদীস

 

১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একরাতে হযরত উম্মে হানী রাদিআল্লাহু আনহা এর ঘরে বিশ্রামে ছিলেন । তার অর্থ নিদ্রা অবস্থায় হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম ও অন্যান্য ফেরেশতাসহ ওই ঘরে অবতরণ করেন । এবং তাকে মসজিদে হারামে নিয়ে যান হযরত জিব্রাইল ও মিকাইল আলাইহিস সালাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জমজমের পাশে নিয়ে বক্ষ বিদীর্ণ করেন ।

এবং কলব (অন্তরাত্মা) বের করে জমজমের পানি দিয়ে ধুয়ে ইলমম ও হিকমত এ পরিপূর্ণ স্বর্ণের পাত্রে রেখে আবার বুকে স্থাপন করেন ।

এরপর তারা বোরাক নামক বাহনে করে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত নিয়ে যান ।

( সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৮৮৭ সহীহ মুসলিম , হাদীস নং ২৬৭ )

 

২. হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন , আমার কাছে একটি সাদা প্রাণী- বোরাক নিয়ে আসা হয় । যা গাধার চেয়ে বড় এবং খচ্চরের চেয়ে ছোট ছিল । ওটা ওর এক এক পদক্ষেপ এত দূরে রাখছিল যতদূর ওর দৃষ্টি যায় । আমি তাতে উঠে বসলাম । এবং ও আমাকে নিয়ে চললো । আমি বাইতুল মুকাদ্দাস পৌঁছে গেলাম । এবং দরজার ওই শিকলের সঙ্গে বেধে রাখলাম যেখানে নবীগণ বাঁধতেন ।

 

তারপর আমি মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি । যখন সেখান থেকে বের হলাম তখন জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম আমার কাছে একটি মদ এবং একটি পাত্রে দুধ নিয়ে এলেন । আমি দুধ পছন্দ করলাম । জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বললেন আপনি ফিতরাত (প্রকৃতি ) পছন্দ করেছেন ।

 

তারপর আমাকে প্রথম আকাশের দিকে নিয়ে যাওয়া হল । এবং জিবরাঈল আলাইহিস সালাম দরজা খুলে দিতে বললেন । জিজ্ঞেস করা হলো আপনি কে ? উত্তরে বলা হলো! জিব্রাইল । আবার তারা প্রশ্ন করেন আপনার সাথে কে রয়েছেন ? জবাবে তিনি বলেন আমার সাথে রয়েছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো তার যাত্রা কি শুরু হয়েছে ? জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দেন তার যাত্রা শুরু হয়েছে । তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো ।

 

সেখানে হযরত আদম আলাইহিস সালামের সাথে সাক্ষাৎ হলো । তিনি মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের দোয়া করলেন । এরপর আমাকে দ্বিতীয় আকাশে নিয়ে যাওয়া হল এবং জিবরাঈল আলাইহিস সালাম দরজা খুলে দিতে বললেন । জিজ্ঞেস করা হলো আপনি কে ? উত্তরে বলা হলো! জিব্রাইল । আবার তারা প্রশ্ন করেন আপনার সাথে কে রয়েছেন ? জবাবে তিনি বলেন আমার সাথে রয়েছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

 

পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো তার যাত্রা কি শুরু হয়েছে ? জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দেন তার যাত্রা শুরু হয়েছে । তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো ।

 

দ্বিতীয় আকাশে আমি ইয়াহহিয়াহ আলাইহিস সালাম ও ঈসা আলাইহিস সালামকে দেখতে পেলাম । যারা একে অপরের খালাতো ভাই ছিলেন । তারা দুজন ও আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের প্রার্থনা করলেন । তারপর আমাকে নিয়ে তৃতীয় আকাশে উঠে যান এবং ফেরেশতা জিবরাঈল আলাইহিস সালাম দরজা খুলে দিতে বললেন, প্রশ্ন করা হলো কে ? উত্তরে বলা হলো‌ জিব্রাইল । আবার তারা প্রশ্ন করেন আপনার সাথে কে রয়েছেন ? জবাবে তিনি বলেন আমার সাথে রয়েছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

 

 

পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো তার যাত্রা কি শুরু হয়েছে ? জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দেন তার যাত্রা শুরু হয়েছে । তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো ।

 

তৃতীয় আকাশে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো ইউসুফ আলাইহিস সালামের সাথে । যাকে সমস্ত সৌন্দর্যের অর্ধেক দেওয়া হয়েছিল। তিনি ও আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং আমার মঙ্গলের দোয়া করলেন ।
অতঃপর জিবরাইল আলাইহিস সালাম আমাকে সাথে নিয়ে চতুর্থ আকাশে উঠে যান এবং দরজা খুলে দিতে বললেন
প্রশ্ন করা হলো কে ? উত্তরে বলা হলো‌ জিব্রাইল ।

 

 

আবার তারা প্রশ্ন করেন আপনার সাথে কে রয়েছেন ? জবাবে তিনি বলেন আমার সাথে রয়েছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো তার যাত্রা কি শুরু হয়েছে ? জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দেন তার যাত্রা শুরু হয়েছে । তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো ।

 

চতুর্থ আকাশে হযরত ঈদ্রিস আলাইহিস সালামের সাথে সাক্ষাৎ হলো । তিনি আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং আমার মঙ্গল কামনা করে দোয়া করলেন । তার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
এবং আমি তাকে দান করেছিলাম উচ্চমর্যাদা ( সূরা মরিয়ম,৫৭ )
তারপর পঞ্চম আকাশে আমাকে নিয়ে যাওয়া হল এবং ফেরেশতা জিব্রাইল আলাই সালাম এর দরজা খুলে দিতে বললেন

 

আপনারা পড়ছেন  শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত 

প্রশ্ন করা হলো কে ? উত্তরে বলা হলো‌ জিব্রাইল । আবার তারা প্রশ্ন করেন আপনার সাথে কে রয়েছেন ? জবাবে তিনি বলেন আমার সাথে রয়েছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো তার যাত্রা কি শুরু হয়েছে ? জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দেন তার যাত্রা শুরু হয়েছে । তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো ।

 

পঞ্চম আকাশে সাক্ষাৎ হয় হযরত হারুন আলাইহিস সালামের সাথে তিনি আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং আমার মঙ্গলের দোয়া করলেন ।
এরপর আমরা ষষ্ঠ আকাশে ওঠলাম এবং জিবরাঈল আলাইহিস সালাম দরজা খুলতে বললেন
প্রশ্ন করা হলো কে ? উত্তরে বলা হলো‌ জিব্রাইল । আবার তারা প্রশ্ন করেন আপনার সাথে কে রয়েছেন ? জবাবে তিনি বলেন আমার সাথে রয়েছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো তার যাত্রা কি শুরু হয়েছে ? জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দেন তার যাত্রা শুরু হয়েছে । তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো ।

 

 

ষষ্ঠ আকাশে মূসা আলাইহিস সালামের সাথে সাক্ষাত হয় । তিনি আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং আমার মঙ্গলের দোয়া করলেন ।
তারপর তিনি আমাকে নিয়ে সপ্ত আকাশ গমন করেন এবং জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম দরজা খুলতে বললেন
প্রশ্ন করা হলো কে ? উত্তরে বলা হলো‌ জিব্রাইল । আবার তারা প্রশ্ন করেন আপনার সাথে কে রয়েছেন ? জবাবে তিনি বলেন আমার সাথে রয়েছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো তার যাত্রা কি শুরু হয়েছে ? জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দেন তার যাত্রা শুরু হয়েছে । তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো ।

 

সপ্তম আকাশে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বায়তুল মামুর হেলান দেয়া অবস্থায় দেখতে পাই। বায়তুল মামুর এ প্রত্যহ ৭০ হাজার ফেরেশতা গমন করে থাকেন । কিন্তু একদিন যারা ওখানে যান তাদের পালা কেয়ামত পর্যন্ত আর আসবে না । তারপর আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে যাওয়া হয় ।যেখানে গাছের পাতা ছিল হাতির কানের সমান এবং ফল ছিল বৃহৎ মাটির পাত্রের মতো । ওটা আল্লাহ তাআলার আদেশ ডেকে রাখছিল । ওর সৌন্দর্যের বর্ণনা কেউ দিতে পারে না ।

 

তারপর আল্লাহ তাআলা আমার ওপর যে ওহী নাযিল করার তা নাযিল করেন । এরপর আমার উম্মতের উপর দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয় । সেখান হতে নেমে আসার সময় মূসা আলাইহিস সালাম এর সাথে দেখা হয় । তিনি জিজ্ঞেস করেন আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে আপনার উম্মতের জন্য কি প্রাপ্ত হয়েছেন ? আমি উত্তরে বললাম দিনে-রাতে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে । মূসা আলাইহিস সালাম বললেন আপনি আপনার রবের কাছে ফিরে যান। আপনার উম্মত দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার ক্ষমতা রাখে না ।

 

আপনার পূর্বে আমি বনী ইসরাঈলদের লোকদের দেখেছি যে তারা কেমন ছিল। সুতরাং আমি আমার রবের কাছে যাই এবং বললাম হে আমার রব ! আমার উম্মতের বোঝা কমিয়ে দিন । তারা এতটা পালন করতে পারবে না । সুতরাং তিনি পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে দেন । এরপর আমি মূসা আলাইহিস সালাম এর কাছে ফিরে এলাম । মূসা আলাইহিস সালাম আবার জিজ্ঞেস করলেন আপনাকে কি বলা হয়েছে ? বললাম আমার রব পাঁচ অক্ত কমিয়ে দিয়েছেন ।

 

এ কথা শুনে মূসা আলাইহিস সালাম বললেন আপনি আবার আপনাদের কাছে ফিরে যান । আপনার উম্মতের বোঝা কমিয়ে আনুন । এভাবে আমি আল্লাহ তা’আলা ও মূসা আলাইহিস সালাম এর মাঝে আসা-যাওয়া করতে থাকলাম এবং প্রতিবার পাঁচ ওয়াক্ত করে সালাত কমিয়ে দেওয়া হচ্ছিল । অবশেষে তিনি বললেন হে মুহাম্মদ দিনে-রাতে মোট পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করা হলো এবং প্রত্যেকটি সালাতের জন্য দশগুণ সমাপ্ত করা হবে । সুতরাং এর মোট পরিমাণ পঞ্চাশে থাকলো । যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজ করার ইচ্ছা করলো অথচ তা সে করলো না তাহলে একটি ভাল কাজের আমল তার আমলনামা লিপিবদ্ধ করা হবে ।

 

আর যদি বাস্তবায়িত করে তাহলে দশটি আমলের সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে । কোন ব্যক্তি যদি খারাপ কাজ করার ইচ্ছা করে কিন্তু সে যদি ওটা না করে তাহলে তার আমলনামায় কোন পাপ লিপিবদ্ধ করা হবে না । অতঃপর আমি নিচে নেমে আসি এবং মূসা আলাইহিস সালাম এর সাথে দেখা হলে তাকে এসব কথা বলি।  তিনি বললেন আপনি আপনার রবের কাছে ফিরে যান । আপনার উম্মতের বোঝা কমিয়ে আনুন । তারা কখনোই আদেশ পালন করতে সক্ষম হবে না । কিন্তু বারবার আল্লাহর কাছে আসা যাওয়ার পর তার কাছে আবার যেতে আমি লজ্জাবোধ করছিলাম
( আহমদ/১৩৪৮ মুসলিম/ ১১৪৫ )

৩. আনাস রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত।‌মিরাজের রাতে ঊর্ধ্ব গমনের জন্য বোরাকের লাগাম এবং জিন বা গদি প্রস্তুত করে রাখা ছিল । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ার হওয়ার সময় সেটা ছটফট করতে থাকে । তখন জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি এটা কি করছো ? আল্লাহর শপথ তোমার উপর ইতোপূর্বে তার চেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি কখনো সাওয়ার হয়নি । একথা শুনে বোরাক সম্পূর্ণরূপে শান্ত হয়ে যায় । ( তিরমিজি/ ৩১৩১ )

৪. ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ( রহ)হযরত আনাস রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যখন আমাকে আমার মহামহিমান্বিত রবের দিকে নিয়ে যাওয়া হয় তখন এমন কতগুলি লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম যাদের তামার নখ ছিল যা দ্বারা তারা নিজেদের মুখমন্ডল ও বুক খোঁচাচ্ছিল । আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা ? উত্তরে বললেন এরা হচ্ছে ওরাই যারা লোকের গোশত ভক্ষণ করত অর্থাৎ গীবত করত এবং তাদের মর্যাদাহানী করতো ।(আহমদ/৩২২৪ আবু দাউদ/৪৮৭৮

৫ .জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত । তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, মিরাজের ব্যাপারে কুরাইশরা যখন আমাকে মিথ্যা প্ৰতিপন্ন করতে চেষ্টা করল তখন আমি কাবার হিজর অংশে দাঁড়ালাম। আর আল্লাহ বাইতুল মাকদিসকে আমার সামনে উদ্ভাসিত করলেন। ফলে আমি তার দিকে তাকিয়ে তার চিহ্ন ও নিদর্শনগুলো তাদেরকে বলে দিতে থাকলাম। ( সহীহ বুখারী, ৩৮৮৬)

 

 

শবে মেরাজ ও বিজ্ঞান

 

এখন বিজ্ঞানের যুগ । বিজ্ঞানের হাজারো আবিষ্কার সত্বেও মহাকাশের অপূর্ব সৃষ্টিলীলা সম্পর্কে বিজ্ঞান তেমন কোনো সংবাদই দিতে সক্ষম হয়নি । আল্লাহ তাআলা যে সংবাদ দিয়েছেন তার সত্যতাও তারা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় নি । অতএব তাদের পিছনে অত ছোটাছোটির কিছু নেই ।‌ খবর রাখা ভালো তবে ব্যস্ত হওয়ার কোনো মানে হয় না । কেননা কোন নবী রাসূল ওইগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করেননি । মানুষ সৃষ্টি হওয়ার কারণ ইবাদত। এদিকে সবার মনোযোগী হওয়া উচিত । তবুও সংক্ষিপ্ত একটু ধারনা দিচ্ছি । যদি কিছুটা বুঝতে সক্ষম হন ।

শবে মেরাজ ও বিজ্ঞান

হাদিসে আছে পৃথিবী থেকে প্রথম আকাশের দূরত্ব ৫০০ বছরের রাস্তা । ৫০০ বছরের রাস্তা কত মাইল ? এ হিসেব যদি আমরা করি তাহলে দেখব যে শরীয়তে মুসাফির বলা হয় সে ব্যক্তি কে যে তিন দিনের দূরত্বের রাস্তা অতিক্রম করার নিয়তে ঘর থেকে বের হয় । আর একটা মানুষ চলার পথে তার স্বাভাবিক প্রয়োজন সেরে তিন দিনে ৪৮ মাইল পথ অতিক্রম করতে পারে অর্থাৎ প্রতিদিন সে ১৬ মাইল পথ হেঁটে অতিক্রম করতে পারে ।

 

আরো বেশিও পারে তবে সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ । উদাহরণস্বরূপ ১৬ বলা হয়েছে । এখন দৈনিক ১৬ মাইল হলে মাসে ৪৮০ মাইল । বছরে ৫,৭৬০ মাইল। একশ বছরে ৫, ৭৬,০০০ মাইল । অতএব ৫০০ বছরে ২৮,৮০,০০০ মাইল। আর যদি ৫০০ বছর রাস্তা মানুষের না হয়ে বরাকের হয় বা ঐ সিঁড়ির হয় যাতে চড়ে নবীজি আসমানের উঠেছিলেন তাহলে প্রথম আসমানের দূরত্ব কতটুকু ? আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ তা জানে না । তবে বিজ্ঞানীরা বর্তমানে পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরের যে নক্ষত্রটি আবিষ্কার করেছেন তার নাম দিয়েছেন তারা কোয়াশা ।

 

বিজ্ঞানীদের হিসাব মতে কোয়াশা পৃথিবী থেকে এক হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে । আর আলোর গতি প্রতি সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল । অর্থাৎ প্রায় তিন লক্ষ কিলোমিটার । সুতরাং পৃথিবীবাসী যদি কোনদিন এমন যানবাহন তৈরি করতে সক্ষম হয় যার গতি হবে সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি মাইল , তাহলে ওই যানবাহনের চড়ে কোয়াসা পর্যন্ত পৌঁছতে সময় লাগবে এক হাজার কোটি বছর।

 

এবার ভেবে দেখুন তো হাজার হাজার গ্রহ- উপগ্রহ পাড়ি দিতে বিজ্ঞানের আবিষ্কার পারবে কি ? এটাই যদি না পারে তাহলে প্রথম আসমান , দ্বিতীয় আসমান , এভাবে সপ্ত আসমান পর্যন্ত পৌঁছা কেয়ামত পর্যন্ত সময় দেয়া হলেও তারা সক্ষম হবে না । অথচ আল্লাহ তাআলা এক রাতের মধ্যেই তাঁর হাবিবকে সবকিছু দেখিয়ে , নিজের কাছে নিয়ে আবার সকালের আগে পৌঁছে দিয়েছেন । তিনিই একমাত্র আল্লাহ । তার পক্ষেই শুধু এটা সম্ভব ।

 

শবে মেরাজের শিক্ষা

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসংখ্য ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে মেরাজের রাতে পথ চলছিলেন । এক জায়গায় তিনি একদল লোকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন । যাদের হাতে বড় বড় তামার নখ ছিল । তা দিয়ে তারা নিজেদের চেহারা আচড়ে ক্ষতবিক্ষত করছিল । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন এরা কারা?  জিবরাঈল আলাইহিস সালাম উত্তর দিলেন এরা সেসব লোক যারা দুনিয়াতে মানুষের গোশত খেত । অর্থাৎ এরা গীবত করতো । এরা পরনিন্দা করতো। এরা মানুষের দোষ চর্চা করত ।

এরপর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সামনে অগ্রসর হলেন । তিনি এক ব্যক্তিকে রক্তের দরিয়ায় হাবুডুবু খেতে দেখলেন । এবং দেখলেন যে সে পাথর লোকমা বানিয়ে খাচ্ছে । তখন নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন ব্যাক্তি কে ? জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম বললেন এ হলো সে যে সুদ খেতো । মানুষ রক্ত পানি করে টাকা পয়সা উপার্জন করতো আর এরা অবৈধভাবে তাদের সেগুলো গ্রহণ করত ।

এরপর একদল লোককে তিনি দেখলেন যাদের মাথা পাথর দিয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেওয়া হচ্ছে । আবার মুহূর্তের মধ্যে তা আগের মতোই হয়ে যাচ্ছে । আবার পাথর মেরে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হচ্ছে । এভাবে অনবরত চলছে । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন এরা কারা ? ফেরেশতা জিব্রাইল আলাইহি স সালাম বললেন এর ঐসব লোক যারা ফরজ নামাজে অলসতা করতো ।

শবে মেরাজের শিক্ষা

এরপর তিনি একদল নারী-পুরুষের কাজ দিয়ে গেলেন । দেখলেন তাদের সামনে একটা পাতিলে পাকানো গোশত আছে। আর অপর একটা পাতিলে কাঁচা- পচা গোস্ত রাখা আছে । কিন্তু লোকগুলি ভালো পাকানো গোশত বাদ দিয়ে কাঁচা- পচা গোশত খাচ্ছে।  জিজ্ঞেস করা হলো এরা কারা? হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উত্তর দিলেন এরা আপনার উম্মতের ঐ সমস্ত  নারী-পুরুষ যাদের ঘরে হালাল বৈধ স্বামী স্ত্রী থাকা সত্বেও এরা অন্য নারী পুরুষের সাথে রাত কাটাতো ।

এক জায়গায় নবীজি দেখলেন যেন একটা তন্দুর- রুটি পাকানোর চুলা । যার মাঝে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে । কিছুসংখ্যক উলঙ্গ নারী পুরুষ আগুনের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে । সেখান থেকে বিশ্রী দুর্গন্ধ বেরিয়ে আসছে এবং তাদের লজ্জাস্থান কামড়াচ্ছে । নবীজি জিজ্ঞেস করলেন এরা কারা? তাকে বলা হল এরা ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ । যারা ব্যভিচারে লিপ্ত হতো ‌।

এরপর কত দূর অগ্রসর হয়ে দেখলেন এক ব্যক্তি একটা বিরাট লাকড়ির বোঝা জমা করছে । এবং মাথায় উঠাবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আবার আরো কিছু লাকড়ী এনে‌ বোঝাটাকে ভারি করছে । আবার মাথায় ওঠাতে ব্যর্থ হয়ে আবারো বোঝা ছেড়ে লাকড়ি জমা করছে । আর বোঝা ভারি করছে ।‌ অথচ তার উচিত ছিল যখন সে দেখল বোঝা ভারি হয়ে গেছে তখন কিছু লাকড়ি কমিয়ে নেওয়া ।

কিন্তু সে বিপরীত কাজ করছে । এই অভিনব কাজ দেখে নবীজির জিজ্ঞেস করলেন ব্যাপারটা কি ? ফেরেশতা উত্তর দিলেন আপনার উম্মতের ওই ব্যক্তি যার উপরে মানুষের হক ও পাওনা রয়েছে । সে তা আদায় করতে পারছে না । অথচ দিন দিন সে ঋণের বোঝা আরো বাড়িয়ে তুলছে ।

এক জায়গায় গিয়ে দেখলেন কিছু লোকের জিব্বা কাচি দ্বারা কাটা হচ্ছে । আবার সাথে সাথে ঠিক হয়ে আগের মত হয়ে যাচ্ছে ।  আবার কাটা হচ্ছে আবার আগের মত হয়ে যাচ্ছে । এ অবস্থা চলতে আছে।  দয়ার নবীজি প্রশ্ন করলেন এরা কারা ? উত্তর এলো এরা সে সমস্ত লোক যারা মানুষকে উপদেশ দিত কিন্তু নিজেরা সে উপদেশ অনুযায়ী আমল করত না।

প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ ! এগুলো থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত ।

শবে মেরাজের উপহার

মেরাজের রাতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মতকে তিনটি জিনিস হাদিয়া দেওয়া হয় এক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দুই বাকারার শেষ দুঃটি  আয়াত যেখানে ঈমান আনুগত্য ও দোয়ার আলোচনা রয়েছে । তিন শিরক থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ এবং এর বিনিময় ক্ষমার ওয়াদা । ( সহীহ মুসলিম হাদীস নং ২৭৯ , জামে তিরমিজি , হাদীস নং ৩২৭৬ )

এক নম্বর হাদিয়া:  পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ

এই হাদিয়া নিয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম ফিরে আসছিলেন । আসার পথে সপ্তম আকাশে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো । তিনি কিছু বললেন না ।

কিন্তু ষষ্ঠ আসমানে যখন হযরত মূসা আলাইহিস সালামের সঙ্গে দেখা হলো তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনার উম্মতের জন্য কি হাদিয়া নিয়ে এলেন ? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ । হযরত মূসা আলাইহিস সালাম বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আপনি আপনার পালনকর্তার নিকট ফিরে যান এবং সহজ করার আবেদন করুন।

আপনার উম্মতের জন্য এ বিধান কষ্টকর হবে । আমি বনী-ইসরাঈলকে খুব পরীক্ষা করেছি ।তাদের ওপর আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে । সেই অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বলছি । আপনার উম্মত দুর্বল হবে । তারা এ দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে পারবে না । আপনি ফিরে যান । কিছু সহজ করে নিয়ে আসুন । (সহীহ বুখারী)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে গেলেন । আল্লাহর নিকট বিনীত দরখাস্ত পেশ করলেন । আল্লাহ তা’আলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কমিয়ে দিলেন।  মূসা আলাইহিস সালাম এর সঙ্গে আমার দেখা হলো। তিনি জিজ্ঞেস করলেন কি খবর ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আল্লাহ তায়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন । হযরত মূসা আলাইহিস সালাম আবার আগের কথাই বললেন ।

আপনার উম্মত দুর্বল হবে । তারা দৈনিক এত নামাজ আদায় করতে পারবে না । আপনি আবার ফিরে যান।  এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূসা আলাইহিস সালাম ও আল্লাহর দরবারে নয় বার দা
যাতায়াত করলেন । এবং প্রতিবার আল্লাহ তা’আলা পাঁচ ওয়াক্ত করে কমিয়ে দিলেন ।

শেষ পর্যন্ত মোট পাঁচ ওয়াক্ত থাকলো। মূসা আলাইহিস সালাম আবারো যেতে অনুরোধ করলেন। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন আমি লজ্জা বোধ করছি। আর ফিরে যেতে পারবো না । তিনি নিচের দিকে রওনা হলেন । এমন সময় গায়েবী আওয়াজ এলো ।

ما يبدل القول لدي وما انا بظلام للعبيد
অনুবাদ: আমার কথায় পরিবর্তন হয় না । আমি বান্দার প্রতি জুলুম করি না । (সূরা কাফ :২৯)
অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে কিন্তু ৫০ ওয়াক্তের সওয়াব পাবে ।

দুইনাম্বার হাদিয়া : সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত

اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَاِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَالْمُؤْمِنُوْنَ ؕ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللهِ وَمَلٰٓئِکَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ * لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ * وَقَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ٭ غُفْرَانَکَ رَبَّنَا وَ اِلَیْکَ الْمَصِیْرُ ﴿۲۸۵﴾ لَا یُکَلِّفُ اللهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا ؕ  لَهَا مَا کَسَبَتْ وَعَلَیْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ؕ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَاۤ اِنْ نَّسِیْنَاۤ اَوْ اَخْطَاْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَیْنَاۤ اِصْرًا کَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَۃَ لَنَا بِهٖ ۚ وَاعْفُ عَنَّا * وَاغْفِرْ لَنَا * وَارْحَمْنَا * اَ نْتَ مَوْلٰىنَا فَانْصُرْنَا عَلَی الْقَوْمِ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۲۸۶﴾

            আয়াত দুটির ফজিলত

১.যে ব্যাক্তি সূরা বাক্বারার শেষ তিন আয়াত ঘুমানোর আগে পড়বে। ঐ রাতে ঘুমের কারণে সে যদি তাহাজ্জুদ নামায পড়তে না পারে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে তাহাজ্জুদ পড়ার নেকী দান করবেন।

২. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়বে, ঐ ব্যক্তির জন্য তা যথেষ্ট হয়ে যাবে। (অর্থাৎ জিনের ক্ষতি, মানুষের ক্ষতি, সকল পেরেশানি ও মুছিবত থেকে হেফাজতের জন্য যথেষ্ট হবে। কারো কারো মতে রাতের সকল ওজিফার জন্য যথেষ্ট হবে)
(সহীহ বুখারী, হাদীস: ৪০০৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১৮৭৮)

৩.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন হযরত জিবরিল ‘আলাইহিস সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন, আপনি এমন দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহন করুন যা অন্য কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি, একটি হল সুরা ফাতিহা অপরটি হল সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত। আপনি এর থেকে যা পড়বেন তা আপনাকে দেওয়া হবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১৮৭৭)

তিন নম্বর হাদিয়া: গুনাগার উম্মতের ক্ষমা ঘোষণা

কাফের মুশরিক ব্যতীত অন্য সকল উম্মতকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে । অর্থাৎ কাফের মুশরিকদের ন্যায় গোনাগার মুসলিম উম্মাহকে স্থায়ীভাবে জাহান্নামে রাখবেন না । যারা কবিরা গুনাহ করে তাওবা না করে মারা গেছে তাদের কাউকে নবীর সুপারিশ দ্বারা ক্ষমা করবেন । কাউকে ফেরেশতাদের সুপারিশ দ্বারা , কাউকে আলেমের সুপারি তারা ক্ষমা করবেনকাউকে কোরআনের হাফেজের সুপারিশ দ্বারা ক্ষমা করবেন ।

কাউকে নামাজের সুপারিশ দ্বারা কাউকে রামাদানের সুপারিশ দ্বারা কাউকে কুরআনের সুপারিশ দ্বারা আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন । এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন । পক্ষান্তরে যদি গোটা বিশ্ব কোন কাফের মুশরিকদের জন্য সুপারিশ করে , এই পৃথিবীতে যত সম্পদ আছে সেগুলোসহ যদি আরও অনুরূপ সম্পদ মুক্তিপণ হিসেবে দেওয়া হয় তথাপি আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন কোন কাফের মুশরিক কে ক্ষমা করবেন না ।

উল্লেখিত তিনটি বিষয় ছাড়াও আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মেরাজে আল্লাহর দান করেছেন । যা সূরা নাজম এ উল্লেখ করা হয়েছে। সে ব্যাপারে বিভিন্ন মতামত রয়েছে । তবে কোনো কোনো মুফাসসিরদের অভিমত হলো ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার একটা গঠনতন্ত্র বা সংবিধান আল্লাহ তা’আলা তাঁর নবীজিকে দান করেছেন । যাতে ১৪টি প্রস্তাব রয়েছে।  যা মেনে চলা প্রত্যেকটি নাগরিকের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য ।

১. তাওহীদ

২. পিতা মাতার খেদমত

৩. আত্মীয়স্বজনদের হক আদায় করা

৪. অপচয় না করা

৫. মিতব্যয়ী হওয়া

৬. সন্তানদের হত্যা না করা

৭. ব্যভিচার থেকে বিরত থাকা

৮. খুনখারাবি না করা

৯. ইয়াতিমের মালের কাছেও না যাওয়া

১০. অঙ্গীকার পূরণ করা

১১. মাপ সঠিক ভাবে দেওয়া

১২. অজানা বিষয়ের পেছনে পড়ে না থাকা

১৩. অহংকার না করা

১৪. শিরক না করা ।

 শবে মেরাজের কবিতা

নবীর মেরাজ

শরিফ আহমাদ

রাতের বেলা সবাই যখন

বিভোর ঘুমের মাঝে

উম্মে হানীর ঘরে নবী

শুয়ে নিজের সাজে

হঠাৎ করে দুই ফেরেশতা

এলো যেন লাজে ।

তাকে নিয়ে গেলেন তারা

যমযম কূপের কাছে

বুক করে দেন‌ অপারেশন

যেমন হুকুম আছে

বোরাকের পিঠজুড়ে নবী

ফেরেশতারা পাছে ।

বোরাক ছিলো বিশেষ বাহন

কী যে ছিলো গতি

প্রথম কেবলায় পৌঁছে যেতে

হলো না ক্লেশ-ক্ষতি

মানলো সকল নবী-রাসুল

নবীর ইমামতি ।

সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে

সামনে গেলেন একা

আরশে আজীম পৌঁছে প্রভুর

সঙ্গে করেন দেখা

তিন উপহার নিয়ে আসেন ‌

সব কিতাবে লেখা ।

নবীর মেরাজ বিশ্বাস করা

ঈমানের এক অংশ

সন্দেহ-বীজ বপন করে

নাস্তিকতার বংশ

নাম-নিশানা মুছবে তাদের

তারাই হবে ধ্বংস ।

শবে মেরাজের উক্তি ও স্ট্যাটাস

★ যৌবনের চেহারাটা মানুষ পছন্দ করে। আর যৌবন কালের ইবাদাত স্বয়ং আল্লাহ পছন্দ করেন।

★ বুকে হাজারো কষ্ট নিয়ে

আলহামদুলিল্লাহ বলাটা।

আল্লাহ’র প্রতি

অগাধ বিশ্বাসের নমুনা।

★ সামনে আসছে রোজা, হালকা কর গোনাহের বোঝা,

যদি কর পাপ চেয়ে নাও মাফ ।

★ এসো নিয়ত করি !

আজ থেকে সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বো ।

★ নামাজ সব সমস্যার সমধান।

নামাজ সব রোগের প্রধান ওষুধ।

নামাজ নিজে পড়ুন।।

অন্যকে পড়ার জন্য তাগিদ দিন।

★ নামাজ বেহেস্তের চাবি।

★ সবচেয়ে বড় চাকরি হচ্ছে নামাজ

যার বেতন হচ্ছে জান্নাত ।

★ ৩০ টাকার নামাজ শিক্ষার

বইয়ে যা আছে‌ , পৃথিবীর দামী বইয়েও তা নেই ।

★ কখনো হতাশ হলে

দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিও।

হতাশা কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ ।

★ ঘুম নেই নামাজ পড়ো

মনে শান্তি নেই

কোরআন পড়ো।

★ তোমরা সিজদায়

বেশি বেশি দোয়া করো।

কেননা সিজদা হচ্ছে দোয়া

কবুলের উপযুক্ত সময়।

সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৮৭০

★ পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান মসজিদ।

সেজদারত অবস্থায় কারও মৃত্যু হলে জান্নাত সুনিশ্চিত।

★ বেশি কিছু চাইনা হে আল্লাহ । পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তাওফিক দিও ।

★ শ্রেষ্ঠ Call

হাইয়া আলাস সালাহ –

নামাজের জন্য এসো

★ মসজিদে প্রথম কাতারে যদি

ফকিরও বসে তাকে উঠানোর

অধিকার কোনো রাজার নেই।

এটাই ইসলামের সৌন্দর্য।

★ নামাজী ছেলে এবং মেয়েরা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হতে পারে ।

★ দুনিয়ার মসজিদগুলা এতো সুন্দর

না জানি আল্লাহর জান্নাত কতটা সুন্দর!

★ প্রকৃত যুদ্ধ তারাই যারা শয়তানকে পরাজিত করে

নামাজ পড়তে যায় ।

★ তিন বেলা আহার যতটা গুরুত্বপূর্ণ

৫ ওয়াক্ত নামাজ তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ !!

★ নিয়মিত নামাজ

মানুষের রিজিক বৃদ্ধি করে।

নিশ্চয়ই নামাজ

মানুষকে সকল অশ্লীল

কাজ থেকে বিরত রাখে।

( আল কুরআন )

★ অপেক্ষা করা হোক আযানের জন্য।

 ভালোবাসা হোক নামাযের জন্য।