কবরের উপর মসজিদ বা বাড়ি নির্মাণ করা যাবে কি?
প্রশ্নঃ কবরের উপর মসজিদ বা বাড়ি নির্মাণের হুকুম কি? কবর স্থানের উপর মসজিদ তৈরীর বিষয়ে কুরআন এবং হাদীসের আলোকে সমাধান চাই ।
সরকার নেওয়াজ শরীফ
গোসাইরহাট, শরীয়তপুর ৷
উত্তরঃ- بسم الله الرحمن الرحيم
কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করা যাবে ।
এটি জায়েজ আছে । দুইটি শর্ত সাপেক্ষে ।
এক.
যদি উক্ত কবরস্থানটি আর কবর দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত না হয় ।
দুই.
যদি কবরস্থানে দাফনকৃত লাশ মাটির সাথে মিশে গিয়ে থাকে । উল্লেখিত উভয় শর্ত পাওয়া গেলে তাহলে উক্ত স্থানে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। এবং নামাজ পড়াতে কোন সমস্যা নেই ।
( উমদাতুল ক্বারী, ৩/৪৩৫, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১৬৭ )
কিন্তু যদি এই দুই শর্তের একটি শর্তও না পাওয়া যায় তাহলে উক্ত স্থানে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না । এবং নামাজ পড়া মাকরুহ তাহরীমী হবে । (রদ্দুল মুহ্তার, ৩/১৫৪; তাতারখানিয়া, ২/১৮২)
অতএব শর্তসাপেক্ষে কবরস্থানে মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে কোনো কবরের চিহ্ন রাখা যাবে না । মসজিদের ভেতরে কোনো চিহ্ন থাকলে সমান করে দিতে হবে । এবং নির্মাণ কাজে কখনও কোন হাড়গোড় পাওয়া গেলে সসম্মানে উঠিয়ে অন্যত্র দাফন করে দিতে হবে । তবে হাড়গোড় একদম মাটির সাথে মিশে যাওয়ার পর কাজটি করলে সর্বোত্তম হবে ।
মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান হলে নিম্ন হাদীস দুটি জেনে রাখা ভালো । হযরত আবু সাঈদ রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কেবলমাত্র গোসলখানা ও কবরস্থান ছাড়া সমগ্র জমিনই মসজিদ । ( আবু দাউদ, ৪৯২, জামে তিরমিজী, হাদীস নং ৩১৭)
হযরত ইবনে ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাতটি জায়গায় নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন।
১. ময়লা রাখার স্থানে
২. কসাইখানায়
৩. কবরস্থানে
৪. পথিমধ্যে
৫. গোসলখানায়
৬. উঠ পশুশালায়
৭. বাইতুল্লাহর ( কাবা ঘরের) ছাদে ।
(জামে তিরমিজী ৩৪৬, ইবনে মাজাহ,৭৪৬)
বিশেষ দ্রষ্টব্য : কবরস্থানে নামায পড়া জায়েজ আছে। যদি তাতে নামায পড়ার আলাদা স্থান থাকে এবং তাতে কবর ও নাপাক না থাকে। (আল বাহরুর রায়েক-২/৫৮, ফাতাওয়া শামী-১/৩৮০ )
والله اعلم بالصواب
পড়ুন – রাগের মাথায় তালাক দিলে তালাক হবে কিনা ?
উত্তর লিখনে: শরিফ আহমাদ
শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ ।