আয়াতুল কুরসির উপকারিতা। আয়াতুল কুরসির গুরুত্ব ও ফজিলত মাওলানা শরিফ আহমাদ

আয়াতুল কুরসির উপকারিতা । আয়াতুল কুরসির গুরুত্ব ও ফজিলত । মাওলানা শরিফ আহমাদ

আয়াতুল কুরসির গুরুত্ব ও ফজিলত

 

আয়াতুল কুরসি ও কেন?

 

পবিত্র কুরআনুল কারীমের সবচেয়ে বড় এবং সুরার ক্রমিক অনুযায়ী দ্বিতীয় সুরা হলো সুরা বাকারা । এই সুরাটি মাদানী অর্থাৎ পবিত্র মদিনায় নাজিল হয়েছে। সুরাটির মোট আয়াত ২৮৬ টি । রুকু ৪০ টি ।

২৮৬ আয়াতের মধ্যে ২৫৫ নং আয়াতটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্য বহুল । এটি আয়াতুল কুরসি নামে পরিচিত।

কুরসি শব্দের অর্থ হলো আসন বা চেয়ার। বিশিষ্ট সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বলেন, কুরসি মানে আল্লাহর আরশ ।

আয়াতে উল্লেখিত কুরসি শব্দ থেকেই আয়াতুল কুরসী নাম করণ করা হয়েছে।

 

 

আয়াতুল কুরসির গুরুত্ব ও ফজিলত

 

আয়াতুল কুরসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা আয়াত । হযরত উবাই ইবনে কাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করেন আল্লাহ তাআলার কিতাবে সর্বাপেক্ষা মর্যাদা বিশিষ্ট আয়াত কোনটি ? তিনি উত্তরে বলেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো জানেন

। তিনি পুনরায় এটাই জিজ্ঞেস করেন । বারবার প্রশ্ন করায় তিনি বলেন এটা আয়াতুল কুরসি । তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন হে আবুল মুনজির আল্লাহ তাআলা তোমার জ্ঞানে বারাকাত দান করুন । যে আল্লাহর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তার নামে শপথ করে বলছি যে এর জিব্বা হবে ,ওষ্ঠ হবে , এটি প্রকৃত বাদশাহর পবিত্রতা বর্ণনা করবে ও আরশের পায়ায় লেগে থাকবে। ( মুসনাদে আহমদ, ৫/১৪ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১/৫৫৬ )

 

 

হযরত আবু উমামা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে আর কিছু তার জান্নাতে প্রবেশের পক্ষে অন্তরায় নেই । অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে । ( সুনানে নাসায়ী ,তাবারানী ও সহীহ ইবনে হিব্বান )

 

 

 

আয়াতুল কুরসি সম্পর্কে হাদীস

 

১ নং হাদীস

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কতৃক বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসের একাংশে উল্লেখ করা হয়েছে-

اذا اويت الى فراشك فاقرا اية الكرسي الله لا اله الا هو الحي القيوم حتى تختم الآية فانك لن يزال عليك من الله حافظ ولا يقربك شيطان حتى تصبح.

অনুবাদ: যখন তুমি বিছানায় যাবে‌ তখন আয়াতুল কুরসি‌ – اَللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ اَلۡحَیُّ الۡقَیُّوۡم

থেকে আয়াত শেষ পর্যন্ত পাঠ করবে । তাহলে সকাল পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার নিকট হেফাজতকারী থাকবে এবং শয়তান তোমার কাছে আসতে সক্ষম হবে না । (সহীহ বুখারী , হাদীস নং ২৩১১ )

 

২ নং হাদীস

যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে তার জন্য বেহেস্তের প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর কোন অন্তরায় থাকে না অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই সে বেহেস্তের শান্তি ও আরাম- আয়েশ ভোগ করতে শুরু করবে । হাদীসটি এই-

عن ابي امامه رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من قرا اية الكرسي في دبر كل صلاة لم يمنعه من دخول الجنة الا ان يموت .

আয়াতুল কুরসি উপকারীতা

হযরত আবু উমামা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে আর কিছু তার জান্নাতে প্রবেশের পক্ষে অন্তরায় নেই । অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে । ( সুনানে নাসায়ী , হাদীস নং ৯৯২৮ তাবারানী ও সহীহ ইবনে হিব্বান

আয়াতুল কুরসির উপকারিতা 

 

হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত । নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, প্রতিটি জিনিসের একটি চূড়া থাকে কোরআনের সূরা সূরা বাকারা । তাতে এমন একটি আয়াত আছে যা কোরআনের অন্য আয়াতের নেতা । সেটা হলো আয়াতুল কুরসি । (সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং ৩১১৯)

 

 

আয়াতুল কুরসির উপকারিতা

 

হাদীসে আয়াতুল কুরসি পাঠের অসংখ্য ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে ।

১. আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা

২.অধিক সওয়াব লাভ

৩. মৃত্যুর পরে জান্নাত ।

৪. আল্লাহর জিম্মায় থাকা ।

 

. আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ।

 

হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসে এসেছে, যে ব্যাক্তি বিছানায় যাওয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য প্রহরী  থাকবে।‌আর সকাল পর্যন্ত কোনো শয়তান তার কাছে আসবে না । (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৩১১)

 

২.অধিক সওয়াব লাভ ।

 

একবার আয়াতুল কুরসি পড়ার সওয়াব কুরআনের এক চতুর্থাংশ পাঠ করার সমান ৷

( কানযুল উম্মাল: হাদিস নং২৫৩৬)

 

৩. মৃত্যুর পরে জান্নাত ।

 

হযরত আবু উমামা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে আর কিছু তার জান্নাতে প্রবেশের পক্ষে অন্তরায় নেই । অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে । ( সুনানে নাসায়ী , হাদীস নং ৯৯২৮ তাবারানী ও সহীহ ইবনে হিব্বান )

 

 

আল্লাহর জিম্মায় থাকা ।

 

যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে সে ব্যক্তি পরবর্তী নামাজ পর্যন্ত আল্লাহর জিম্মায় থাকবে ৷

( তারারানী কাবীর: হাদীস নং ২৭৩৪)

 

 

ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি পড়ার উপকারীতা

 

যে ব্যক্তি ঘুমানোর পূর্বে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার হেফাজতের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করা হবে ৷ সে তাকে সকাল পর্যন্ত শয়তান থেকে হেফাজতে রাখবে ৷ ( সহীহ বুখারী: হাদীস নং ২৩১১)

 

 

আয়াতুল কুরসি পড়ার নিয়ম

 

আয়াতুল কুরসি পাঠ করার নির্ধারিত কোন নিয়ম নেই। তবে আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রজীম এবং বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আগে পড়ে তারপর আয়াতুল কুরসি পড়তে হয় । অজুসহ এবং অযু ছাড়া দুই অবস্থায় পড়া যায় । তবে অযুসহ পাঠ করা উত্তম ।

আয়াতুল কুরসি পড়ার নিয়ম

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ: বলেন যখন শয়তান মানব সমাজে পরিভ্রমণ করে তখন পড়ো ।

অর্থাৎ সকাল সন্ধ্যায় পড়ো ।‌ তবে তিনি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর নিয়মিত আয়াতুল কুরসি পাঠ করতেন ।

(তারবিয়্যাতুন নুফুস, পৃষ্ঠা ২৩৫)

 

 

আয়াতুল কুরসি আরবী:

 

اَللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ اَلۡحَیُّ الۡقَیُّوۡمُ ۬ۚ لَا تَاۡخُذُہٗ سِنَۃٌ وَّلَا نَوۡمٌ ؕ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَشۡفَعُ عِنۡدَہٗۤ اِلَّا بِاِذۡنِہٖ ؕ یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَمَا خَلۡفَہُمۡ ۚ وَلَا یُحِیۡطُوۡنَ بِشَیۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِہٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ کُرۡسِیُّہُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ ۚ وَلَا یَـُٔوۡدُہٗ حِفۡظُہُمَا ۚ وَہُوَ الۡعَلِیُّ الۡعَظِیۡمُ .

 

 

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

 

আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমু ,লা তা খুজুহু সিনাত্যু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিস সামা ওয়াতি

ওয়ামা ফিল আরদ। মান‌ যাল্লাযী ইয়াহ ফায়ু ইন দাহু ইল্লা বি ইজনিহি ইয়া লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খলফাহুম ওয়ালা ইউহিতুনা বিশাই ইম মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শা। ওয়াসিয়া কুরসিইউ হুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ ওয়ালা ইয়া উদুহু হিফজুহুমা ওয়াহুয়াল আলিয়্যুল আজীম ।

 

 

আয়াতুল কুরসির অর্থ

 

আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন।

তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান। (আল বাকারা – ২৫৫)

 

 

আয়াতুল কুরসির ঘটনা

 

হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বলেন, আমার ধনাগার হতে জিনেরা খেজুর চুরি করে নিয়ে যেত । আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এজন্য অভিযোগ পেশ করি । তিনি বলেন যখন তুমি তাকে দেখবে তখন–

بسم الله اجيبي رسول الله

পাঠ করবে। যখন সে এলো তখন এটি পাঠ করে আমি তাকে ধরে ফেললাম। তখন সে বললো আর আসবে না । সুতরাং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম । আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হলে আমাকে বললেন, তোমার বন্ধী কি করে ছিল ? আমি বললাম তাকে আমি ধরে ফেলে ছিলাম । কিন্তু সে আর আসবে না অঙিকার করায় তাকে ছেড়ে দিয়েছি । তিনি বললেন সে আবার আসবে । আমি তাকে এভাবে দু তিনবার ধরে ছেড়ে দিই। আমি তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করি ।

 

তিনি বারবার বলেন সে আবার আসবে। শেষবার আমি তাকে বলি এবার তোমাকে ছাড়বো না । সে বলল আপনি আমাকে ছেড়ে দিন । আমি এমন একটি জিনিস শিখিয়ে দিচ্ছি যে কোনদিন জীন ও শয়তান আপনার কাছে আসতে পারবে না । আমি বললাম আচ্ছা বলে দাও। সে বলল ওটা আয়াতুল কুরসি। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করি। তিনি বললেন সে মিথ্যা বাদী হলেও এটা সে সত্য বলেছে । ( মুসনাদে আহমদ, ৫/৪২২ জামে তিরমিজি, হাদীস নং ৮/১৮৩

 

সহীহ বুখারীতে এমন একটি বর্ণনা আছে । হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে আমাকে যাকাতের মালের প্রহরী নিযুক্ত করেন । আমার নিকট একজন আগমনকারী আসে এবং ওই মাল থেকে কিছু কিছু উঠিয়ে সে তারা চাদরে জমা করতে থাকে । আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম আমি তোমাকে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাব । সে বলে আমাকে ছেড়ে দিন । আমি অত্যন্ত অভাবী ।

 

আমার অনেক পোষ্য আছে । তার প্রতি আমার করুণা হয়। আমি তাকে ছেড়ে দেই । সকালে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন তোমার বন্ধীর কি করেছিল ? আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম সে তার ভীষণ অভাবের অভিযোগ করে এবং বলে তারা অনেক পোষ্য‌ রয়েছে । কাজেই আমি তাকে ছেড়ে দেই । নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন সে তোমাকে মিথ্যে বলেছে । সে আবার আসবে। আমি নবীজির কথায় বুঝলাম সে আবার আসবে। আমি পাহারা দিতে থাকলাম। সে এলো এবং খাদ্য উঠাতে লাগল।

 

আমি তাকে ধরে ফেলে বললাম, তোমাকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে যাবো । সে আবার ঐ কথাই বললো আমাকে ছেড়ে দিন। আমার খুবই অভাব। আমার অনেক পোষ্য আছে। আমি প্রতিজ্ঞা করছি আর চুরি করতে আসবো না । তখন তার প্রতি আমার দয়া হলো । আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন হে আবু হুরায়রা তোমার বন্ধী কি করেছে ? আমি বললাম সে ওয়াদা করেছে তাই ছেড়ে দিয়েছি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সে তোমাকে মিথ্যে বলেছে। সে আবার আসবে।

আয়াতুল কুরসির ঘটনা

তৃতীয় রাতে আমি পাহারা দিতে থাকলাম। অতঃপর সে এসে খাদ্য উঠাতে লাগল। আমি তাকে বললাম এটা তৃতীয় বার এই এটাই শেষ বার । তুমি বারবার বলছো আর আসবে না অথচ আবার আসছো । এবার আমি তোমাকে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাবো । সে বলল আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিচ্ছি যা দ্বারা আল্লাহ তাআলা আপনার উপকার সাধন করবেন। আমি বললাম ঐ গুলি কি ? তখন সে বললো যখন আপনি বিছানায় শয়ন করবেন তখন আয়াতুল কুরসি পাঠ করবেন । তাহলে আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য একজন প্রহরী নিযুক্ত করবেন । তাই শয়তান সকাল পর্যন্ত আপনার নিকটবর্তী হতে পারবেনা ।

 

সুতরাং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম । পরদিন সকালে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বললেন আবু হুরায়রা তোমার বন্দী কি করেছে ? আমি বললাম সে আমাকে এমন জিনিস শিখিয়েছে যা দ্বারা আমি আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হব । নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সেটা কি ? সে বলেছে যখন আপনি বিছানায় শয়ন করবেন তখন আয়াতুল কুরসি পাঠ করবেন ।

 

তাহলে আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য একজন প্রহরী নিযুক্ত করবেন । সে ভোর পর্যন্ত পাহারায় থাকবে। তাই শয়তান সকাল পর্যন্ত আপনার নিকটবর্তী হতে পারবেনা । সুতরাং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম । নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন সে চরম মিথ্যাবাদী হলেও এ ব্যাপারে সত্য বলেছে। হে আবু হুরায়রা তুমি তিন রাত কার সাথে কথা বলেছ তুমি কি জানো ? আবু হুরায়রা বললেন না । তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম বললেন সে ছিল শয়তান । ( ফাতহুল বারী,৮/৬৭২,৪/৫৬৮,৬/৩৮৬ সুনানে দারেমী,৫৩২ )

 

 

 

লিখনে: মাওলানা শরিফ আহমাদ

ঢাকা,বাংলাদেশ।