— শরিফ আহমাদ
ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা ৷ ইসলামে রয়েছে অনাবিল শান্তি এবং উন্নত জীবনযাপন পদ্ধতি ৷ এসবের মধ্যে শিষ্টাচার ও চরিত্রের দিকটি অন্যতম। সাধারণত চরিত্রকে আরবী আখলাক শব্দ দ্বারা প্রকাশ
করা হয়। আখলাক শব্দটি খুলকুন শব্দের বহুবচন। অর্থ হচ্ছে চরিত্র, স্বভাব ৷ পরিভাষায় আখলাক হচ্ছে মানব মনে প্রোথিত একটি স্থায়ী গুণ,তা স্বভাবসিদ্ধ হোক বা অর্জিত, আচার-আচরণে যার প্রভাব পড়ে ৷
ইসলামি শাস্ত্র অনুযায়ী আখলাক দুই প্রকার ৷
১. আখলাকে হামিদাহ
২. আখলাকে যামিমা
মানব জীবনের উত্তম গুণাবলিকে আখলাকে হামিদাহ বলে। যেমন-ধৈর্য, সততা,
দেশপ্রেম, সমাজসেবা প্রভৃতি। আর
মানব জীবনের নিকৃষ্ট চরিত্রকে আখলাকে যামিমা বলে। যেমন-অহংকার, ঘৃণা,
মিথ্যাচার ইত্যাদি।
সকল নবী-রাসুল নিজ নিজ জাতিকে উত্তম চরিত্রের শিক্ষা দিয়েছেন।
আর উন্নত চরিত্রকে পূর্ণতা দানের জন্য শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কে আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছেন। কুরআনের বর্ণনা-
নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের উপর
অধিষ্ঠিত। ( সূরা আল কালামঃ৩)
নবীজি সা: বলেছেন মুমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ ঈমানদার হচ্ছে সে ব্যক্তি, যে তাদের মধ্যে সর্বোত্তম চরিত্রের
অধিকারী। (আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযি )
সুতরাং উত্তম চরিত্র হচ্ছে ঈমানের প্রমাণবাহী ৷
ইসলামের ইবাদতসমূহ চরিত্রের সঙ্গে
কঠোরভাবে সংযুক্ত। যে কোনো ইবাদত
একটি উত্তম চরিত্রের প্রতিফলন ঘটায়।
যেমন নামাজ একজন মানুষকে যাবতীয়
অশ্লীল ও অপছন্দনীয় কাজ থেকে রক্ষা
করে আত্মশুদ্ধির উন্নতি সাধনে
প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এ প্রসঙ্গে
কোরআন বলছে – নিশ্চয়ই
নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে বিরত
রাখে। ( সূরা আল আনকাবুত: ৪৫)
তাছাড়া একজন মুসলিমের চরিত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো থাকা অত্যান্ত প্রয়োজন ৷
১.সত্যবাদিতা ৷ ( সূরা আত তওবা: ১১৯ )
২.আমানতদারিতা ৷ (সূরা আন নিসা: ৫৮) ৩. পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার ৷ ( সূরা আন-নিসা: ৩৫) ৪.আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ৷ ( সূরা মুহাম্মদ: ২২-২৩ ) ৫.অঙ্গীকারপূর্ণ ৷ ( সূরা ইসরা ৩৪) ৬.প্রতিবেশীর প্রতি সদ্ব্যবহার ৷ ( সূরা আন নিসা: ৩৬ ) ৭.ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা ৷ ( সূরা আশ শুরা: ৪৩) ৮.লজ্জা ৷ ( বোখারি ও মুসলিম)
৯.ন্যায়পরায়ণতা ৷ ( সূরা মায়িদা: ৮)
১০.চারিত্রিক পবিত্রতা ৷ ( সূরা আন নূর: ৩৩) উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এ কথাই স্পষ্ট যে কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক জীবনযাপনের দ্বারাই উত্তম চরিত্র গঠিত হয় ৷ দুনিয়াতে নবীজির মতো আল আমীন উপাধি মিলে ৷
সৌভাগ্যের দ্বার উন্মোচিত হয় দুজাহানে ৷