— শরিফ আহমাদ
লকডাউনে গাড়ির চাকা বন্ধ হলেও থেমে নেই জীবনগাড়ি ৷ গরুর গাড়ির মতো চলছে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন ৷ নিম্নআয়ের মানুষের চোখে ভাসছে সর্ষে ফুল ৷ মরণদিন গুনছে যেন বস্তিবাসী ৷ প্রতিদিন রাজধানী ঢাকায় আসছে কতো মানুষ ৷ তাদের সংখ্যা কততে দাঁড়িয়েছে সেটির নিশ্চিত তথ্য এখন না পাওয়া গেলেও সংখ্যা বাড়ছে ৷
কারণ প্রতিদিন নতুন করে বিভিন্ন যানবাহনে বহু মানুষ ঢাকায় আসছেন।
তাদেরও আশ্রয় মিলছে বস্তিতেই। যারা গৃহকর্মী থেকে শুরু করে গার্মেন্টস শ্রমিক, গাড়িচালক, দারোয়ান, দিনমজুর এমন নানা পেশায় নিযুক্ত।
অর্থনীতিতে এবং ঢাকার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন
জীবনে তাদের না হলেই নয়। কিন্তু এই বিশাল সংখ্যক দরিদ্র মানুষের জন্য কোন স্বাস্থ্যকর আবাসনের ব্যবস্থা নেই ৷
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে বড় শহরগুলোতে সারা দেশের গ্রাম থেকে আসা বস্তিবাসী বা ভাসমান মানুষদের মধ্যে অর্ধেকই এসেছেন কাজের খোঁজে।
একরকম নিরাপত্তাহীনতা থেকেই ঢাকায় আসেন বস্তিবাসীরা। একই জরিপে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৩০% এসেছেন দারিদ্রের কারণে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নদী ভাঙনের কারণে এসেছেন বাকিরা। দেশের মোট বস্তিবাসীর প্রায় ৯০% ভূমিহীন। পরিসংখ্যান ব্যুরো ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঢাকায় প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে ১৭শ নতুন মানুষ। অন্য সময়ে তাদের ভাগ্যে কাজ জুটলেও এখন নিরুপায় ৷ লকডাউনে বাধ্য হয়ে শহর ছেড়েছে অনেকে ৷ জীবন বাঁচাতে এখনো কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে ছুটছেন গ্রামে ৷ আর যাদের যাওয়ার জায়গা নেই ৷ মাথা গুজার স্থান নেই তারাই পড়ে আছেন বস্তিতে ৷ জমানো পুজি শেষ ইতিমধ্যেই ৷ কাজ না পেয়ে দিশেহারা আজ তারা ৷
কারো কাছেও তেমন সাহায্য পাচ্ছে না ৷ করোনার ডরে নয় করুনার আশায় কখনো লম্বা লাইন ধরেও ত্রাণ পায় না ৷ কেননা ক্যামেরা চলা পর্যন্তই অনুদান চলে ৷ তারপরে নেই ৷ এভাবে আর কতোদিন গৃহবন্দী থাকতে হবে কে জানে!
কোভিট ১৯ আক্রান্ত হয়ে নয় একমুঠো ভাত না পাওয়ার যন্ত্রনায় মরণদিন গুনছে তারা ৷ তাদের সাহায্যের সত্যি কি কেউ নেই? ??