ফেসবুক আসার পর থেকে আমরা অনেক ঘটনাকেই লাইভে প্রচার হতে দেখেছি ৷ কাঙ্খীত লাইভ তো সচরাচর হয়ই কিন্তু অনাকাঙ্খীত ঘটনাও ঘটছে প্রচুর ৷ নিউজিল্যান্ডের সেই কুখ্যাত সন্ত্রাসীর কথা এখনো কেউ ভুলতে পারেনি ৷ যে লাইভে এসে মসজিদে নামাজরত মুসল্লীদের গুলি করে হত্যা করেছে ৷ কিন্তু আজ বাংলাদেশকে দেখতে হলো এক অনাকাঙ্খীত ঘটনা ৷
আজ দুপুরে ফেনী পৌরসভার উত্তর বারাহীপুর ভূঁইয়া বাড়িতে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে ৷ নাউজুবিল্লাহ ৷ কতটা জঘন্য, অমানবিক ও পৈশাচিক! এমনকি নিজেই পুলিশকে খবর দেন পাষণ্ড স্বামী টুটুল। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘাতক টুটুল ফেসবুকে বলে আপনারা আমাকে মাফ করে দিবেন ৷ আমার মেয়ের দিকে খেয়াল রাখবেন ৷ আমার বাবা-মাকে দেখবেন ৷ তার স্ত্রী নাকি তার ফ্যামেলিকে ব্লাকমেইল করতো ৷
গোলাম মাওলা ভূঁইয়ার ছেলে ওবায়দুল হক টুটুল । তার দেড় বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
ফ্যামেলি সূত্রে জানা যায়, ৫ বছর আগে কুমিল্লা জেলার গুনবতী এলাকার আকদিয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তারের সঙ্গে ওবায়দুল হক টুটুলের প্রেম করে বিয়ে হয়।
নিহতের বোন রেহানা আক্তার দাবি করেন, ‘বিয়ের পর থেকে আর্থিক অসচ্ছলতা নিয়ে তাদের পরিবারে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সুসম্পর্কের ঘাটতি ছিলো ৷ টুটুল স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকাও নেন। আরও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন তিনি ৷ কিন্তু তাহমিনা সরাসরি অস্বীকৃতি জানায় ৷ একপর্যায়ে আজ বুধবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে স্বামী টুটুল তার স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।’
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে টুটুলের ছোট ভাই মেহেদী হাসান ৷ সে জানায়, ‘আমার ভাবির (তাহমিনা আক্তার) একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়াঝাটি হতো। বুধবারও দুপুরে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাগারাগি হয় ৷ এরপর স্বাভাবিক হলে তারা নিজেদের রুমে ঘুমাতে যান। পরে কী ঘটেছে তা জানি না ৷ কিছুক্ষণ পর ঢাকা থেকে এক নিকটাত্মীয় ফোন করে বিষয়টি জানালে আমারা তাদের বাসা ভেতর থেকে বন্ধ পাই। সেখানে পুলিশ আসার অপেক্ষা করতে থাকি ৷ পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।’
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন মরদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চত করেছেন ৷ তিনি বলেন, এ ঘটনায় ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী কারণে ওই গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে পুলিশ বিষয়টি উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ।