দীদার মাহদী | ইসলাম সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু ৷ শালীন ও সভ্য আচরণ ইসলাম কামনা করে ৷ তাই দেখা গেছে ভিন্ন জগতের মানুষগুলো যখনই ইসলামের কাছাকাছি এসেছে ৷ যখনই অশ্লীলতায় ডুবে থাকা কেউ ইসলামের সৌন্দর্য দেখেছে ৷ তখনই তারা ফিরে এসেছে নীড়ে ৷ মিডিয়ায় কাজ করা মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে শত শত সেলিব্রেটিরা ইসলামেই খুঁজে পেয়েছে আসল সৌন্দর্য ৷ নিকট অতীতে হ্যাপীর ফিরে আসাসহ অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে ৷ এই তো দুদিন আগেও একজন ঝলমলে দুনিয়ায় ১৬ বছর ধরে অসংখ্য বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও, নাটকে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন সুজানা জাফর। ক্যারিয়ারের এ সময়ে এসে জনপ্রিয় এ মডেল অভিনেত্রী মিডিয়াকে ‘গুডবাই’ বললেন! দুবাই থেকে মিডিয়ার মাধ্যমে সবার উদ্দেশ্যে সুজানা জানালেন, তিনি মিডিয়াতে আর কাজ করবেন না।
তার এই পরিবর্তনের সূচনার কথা বলতে গিয়ে জানান, ‘২০১৮ সালের নভেম্বরে ওমরাহ্ হজ পালনের পর মিডিয়া থেকে মন আরও সরে যায়। গত তিনবছরে দুএকটি কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, মিডিয়া অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। সত্যি কথা বলতে প্রথমদিকে কাজের যেমন পরিবেশ ছিল এখন তেমনটা পাইনি। অন্যের কথা বলে তো আমার লাভ নেই, আমার কাছে এখন মিডিয়া জায়গাটা কমফোর্টেবল না। উপলব্ধি হলো, মিডিয়া আর আমার জন্য না। যেখানে ট্যালেন্টের মূল্য কম সেখান থেকে আমি সরে আসতে চেয়েছি।’
একজন প্রকটিসিং মুসলিম কখনোই মিডিয়ার জগতকে ভালো চোখে দেখেন না ৷ এরা অশ্লীলতার প্রমোটকারী ৷ মিডিয়াকর্মীরা শুধু নিজেরাই নির্লজ্জ নয় বরং সমাজকে নির্লজ্জ বানাতে অবিরাম কাজ করে চলেছে ৷ এদের ব্যক্তিগত জীবন আরো ভয়ংকর ৷ নায়ক নায়িকাদের জীবনকে অনেকে আদর্শ হিসেবে দেখলেও তারা আদর্শ হবার যোগ্যতা রাখেন না ৷ তাদের দাম্পত্য জীবন কলহে ভরপুর ৷ বিয়ে টিকেনা তাদের ৷
তবে এসব নায়ক নায়িকারা অনেক সময় ভালো পরিবার থেকেও উঠে আসে ৷ নারীবাদি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের পরিবার খুবই ধার্মিক ছিলো ৷ যা তার লেখাতেও পাওয়া যায় ৷ কিন্তু সে নাস্তিক হয়েছে ৷ মিডিয়ায় কাজ করা সেলিব্রেটিদের পরিবারের খোঁজ নিলেও দেখা যাবে তারা খুবই ধার্মিক ৷ যেমনটা সুজানার পরিবার ৷
সুজানা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই নামাজ আদায় করতাম, কোরআন পড়তাম। এটা হয়তো অনেকের অজানা ছিল।’
কুরআন থেকে দূরে সরে যাওয়ায় ছিটকে পড়েছিলেন আলোর পথ থেকে ৷ কিন্তু করোনা ভাইরাস নামক মহামারি তাকে আবার কুরআনের দিকে ফিরিয়ে এনেছে ৷ এই বৈশ্বিক মহামারিতে আমরা কতিপয় খ্যাতিমান নাস্তিককেও ইসলামে ফিরে আসতে দেখিছি ৷ সুজানা বলেন, ‘করোনায় গত তিনমাসে হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকে আমি কোরআন, হাদিস থেকে অনেক বেশি জ্ঞান নিয়েছি। সেসব জ্ঞান থেকে আমার মনে হয়েছে মিডিয়াতে আমার কাজ করা ঠিক না এবং মন থেকে কাজের উদ্দীপনা আসছে না। গত ৩ মাসে কোরআন, হাদিস থেকে যা শিখেছি সেখান থেকে আমি বেশি শান্তি পেয়েছি, যা আগে কখনই পাইনি। মিডিয়া ছাড়ার জন্য কেউ আমাকে বাধ্য করেনি। আমার মন থেকে মিডিয়ায় কাজের ইচ্ছে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমি মিডিয়াতে আর কাজ করবো না।’
কুরআন হাদীস পড়ে তিনি আত্ম পরিচয় পেয়েছেন ৷ তিনি বুঝেছেন এটা তার কাজ নয় ৷ এই কাজে তাকে মানায় না ৷ নাটক সিনেমা আর অভিনয় মানেই অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নোংরামি এবং নির্লজ্জতা ৷ যা একজন মুসলিম নারী করতে পারেন না ৷ তিনি তাই সরে এসেছেন অন্ধকার জগত থেকে ৷ এমনকি মিডিয়ায় যোগ্যতার চেয়ে ব্যক্তিগত রিলশনে কাজ করা প্রাধান্য পাচ্ছে সে কথাও তিনি বলেছেন অকপটে ৷
আলোর দেখা পেয়ে তিনি আগামী জীবন সম্পর্কে চমৎকার বার্তা দিলেন ৷ সুজান বলেন, ‘জন্ম মৃত্যু বিয়ে এগুলো আল্লাহর হাতে। তার যখন হুকুম হবে আমার বিয়ে হবে। অবশ্যই বিষয়টি আমার পরিবার দেখবে। কিন্তু আমি মন থেকে চাই আমার যিনি জীবনসঙ্গী হবেন তিনি ইসলামিক মাইন্ডের একজন সৎ মানুষ হবেন।’
আমরা চাই তিনি আমৃত্যু আলোর সাথে থাকুন ৷