সূচিপত্র
sayyidul istighfar bangla অর্থ কী?
ইসতিগফার শব্দটি গফর ‘গইন-ফা-র’ (غ-ف-ر) ধাতুমূল হতে উৎকলিত ৷
যার অর্থ কোন কিছুকে ঢেকে রাখার পর্দা যা তাকে ধুলোময়লা থেকে রক্ষা করে।
ইস্তেগফার আরবি শব্দ ৷ استغفار ৷ এটা মাসদার ৷ শাব্দিক অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা ৷ মাফ চাওয়া ৷
পরিভাষায়: কৃত পাপকর্মের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
তওবা (আরবি: توبة) একটি আরবি শব্দ যার অর্থ অনুশোচনা করা। মহান আল্লাহতালার কাছে ফিরে আসা বা প্রত্যাবর্তন করা ৷
sayyidul istighfar bangla
তওবা ও ইস্তেগফার :
অতীত জীবনের পাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করে অন্যায়ের জন্য অনুশোচনা বোধ করে দৃঢ়তার সঙ্গে পাপ বর্জন করার অঙ্গিকার করাকে তওবা বলা হয়।
এতে ভবিষ্যতে অন্যায়ের পথে ফিরে না যাওয়ার মনমানসিকতা পোষণ করা হয়। তওবা-ইস্তেগফারে আল্লাহ খুশি হন।
পড়ুন- ডিগ্রি রেজাল্ট দেখার নিয়ম
এটা নবী কারিম (সা.)-এর আদেশও বটে। ইস্তেগফার কখনো তওবা অর্থেও হতে পারে আবার কখনো শুধু ক্ষমা প্রার্থনার শব্দগুলো উচ্চারণ করাকে ইস্তেগফার বলা হয়।
যেমন, আস্তাগফিরুল্লাহ (হে আল্লাহ! আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি)৷
নবী-রাসূলদের তাওবা ইস্তেগফার:
নবীজী সাঃ কে আল্লাহ ইস্তেগফার করতে বলেছেন:
فَاعۡلَمۡ اَنَّہٗ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا اللّٰہُ وَ اسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۡۢبِکَ وَ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ مُتَقَلَّبَکُمۡ وَ مَثۡوٰىکُمۡ ﴿٪۱۹﴾
অতএব জেনে রাখ, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই।
তুমি ক্ষমা চাও তোমার ও মুমিন নারী-পুরুষদের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য।
আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি এবং নিবাস সম্পর্কে অবগত রয়েছেন।
[সুরা মুহাম্মদ-১৯]
sayyidul istighfar bangla
وَّ اسۡتَغۡفِرِ اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿۱۰۶﴾ۚ
আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সুরা নিসা, ১০৬]
নুহ (আ.) আল্লাহর কাছে বন্যা থেকে নিজ ছেলেকে পরিত্রাণ দেয়ার আবেদন করেন।
কিন্তু এটিকে আল্লাহ তায়ালা অন্যায় বলে গণ্য করলে নুহ (আ.) এ বলে ইস্তেগফার করেন,
قَالَ رَبِّ اِنِّیۡۤ اَعُوۡذُ بِکَ اَنۡ اَسۡـَٔلَکَ مَا لَـیۡسَ لِیۡ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ وَ اِلَّا تَغۡفِرۡ لِیۡ وَ تَرۡحَمۡنِیۡۤ اَکُنۡ مِّنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۴۷﴾
সে বলল, ‘হে আমার রব, যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই তা চাওয়া থেকে আমি অবশ্যই আপনার আশ্রয় চাই।
sayyidul istighfar bangla
তওবা ইস্তেগফার
আর যদি আপনি আমাকে মাফ না করেন এবং আমার প্রতি দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’। [সূরা হুদ : ৪৭]
মুসা (আ.) এক মিসরিকে হত্যা করে ফেললে তৎক্ষণাৎ অনুতপ্ত হয়ে এ বলে ক্ষমা প্রার্থনা করেন,
قَالَ رَبِّ اِنِّیۡ ظَلَمۡتُ نَفۡسِیۡ فَاغۡفِرۡ لِیۡ فَغَفَرَ لَہٗ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۶﴾
সে বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নফসের প্রতি যুলম করেছি, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন’।
অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সূরা কাসাস : ১৬]
ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে বলেন,
وَ الَّذِیۡۤ اَطۡمَعُ اَنۡ یَّغۡفِرَ لِیۡ خَطِیۡٓئَتِیۡ یَوۡمَ الدِّیۡنِ ﴿ؕ۸۲﴾
‘আল্লাহ তো তিনি যার ব্যাপারে আমি আশা রাখি যে, তিনি আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’ [সূরা শুআরা : ৮২]
ইউনুস (আ.) মাছের পেটে গিয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেন,
وَ ذَاالنُّوۡنِ اِذۡ ذَّہَبَ مُغَاضِبًا فَظَنَّ اَنۡ لَّنۡ نَّقۡدِرَ عَلَیۡہِ فَنَادٰی فِی الظُّلُمٰتِ اَنۡ لَّاۤ اِلٰہَ اِلَّاۤ اَنۡتَ سُبۡحٰنَکَ ٭ۖ اِنِّیۡ کُنۡتُ مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۚۖ۸۷﴾
আর স্মরণ কর যুন-নূন এর কথা, যখন সে রাগান্বিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল এবং মনে করেছিল যে, আমি তার উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করব না।
তারপর সে অন্ধকার থেকে ডেকে বলেছিল, ‘আপনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই’। আপনি পবিত্র মহান।
নিশ্চয় আমি ছিলাম যালিমদের অন্তর্ভুক্ত’ । [সূরা আম্বিয়া : ৮৭]
দাউদ (আ.) এর ব্যাপারে এসেছে,
قَالَ لَقَدۡ ظَلَمَکَ بِسُؤَالِ نَعۡجَتِکَ اِلٰی نِعَاجِہٖ ؕ وَ اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡخُلَطَآءِ لَیَبۡغِیۡ بَعۡضُہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ قَلِیۡلٌ مَّا ہُمۡ ؕ وَ ظَنَّ دَاوٗدُ اَنَّمَا فَتَنّٰہُ فَاسۡتَغۡفَرَ رَبَّہٗ وَ خَرَّ رَاکِعًا وَّ اَنَابَ ﴿ٛ۲۴﴾
দাঊদ বলল, ‘তোমার ভেড়ীকে তার ভেড়ীর পালের সাথে যুক্ত করার দাবী করে সে তোমার প্রতি যুলম করেছে।
আর শরীকদের অনেকেই একে অন্যের উপর সীমলঙ্ঘন করে থাকে।
পড়ুন – শেফায়ে কামেলা আজেলা অর্থ কি?
তবে কেবল তারাই এরূপ করে না যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে’। আর এরা সংখ্যায় খুবই কম।
আর দাঊদ জানতে পারল যে, আমি তাকে পরীক্ষা করেছি।
তারপর সে তার রবের কাছে ক্ষমা চাইল, সিজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং তাঁর অভিমুখী হল। [সাজদাহর আয়াত] [সূরা সোয়াদ : ২৪]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি “আল্লাহর শপথ, আমি প্রতিদিন সত্তরবারের চেয়েও অধিক আল্লাহর ইস্তেগফার করি ও তওবা করি”। (বুখারী)
ইস্তেগফারের গুরুত্ব :
ইস্তেগফার মানুষের গোনাহখাতার কার্যকর প্রতিষেধক ৷
ইস্তেগফারকারীর ওপর আল্লাহ সন্তুষ্ট থাকেন। কারণ সে নিজের গোনাহ ও অপরাধ স্বীকার করে সততার পরিচয় দিয়েছে।
রাসূল (সা.) ইস্তেগফারের প্রতি উৎসাহ প্রদান করে বলেন (অথচ তিনি মা’সুম-নিষ্পাপ), হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার ও তাওবা করো।
কারণ আমি নিজেও দৈনিক শতবার তাওবা-ইস্তেগফার করি।
অন্য হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) বলেন, যার আমলনামায় ইস্তেগফার অধিক সংখ্যায় পাওয়া যাবে তার জন্য রইল সুসংবাদ।
sayyidul istighfar bangla
হযরত লোকমান হাকীম তাঁর সন্তানকে উপদেশ দান করে বলেন, হে আমার পুত্র! ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলী’ বলাকে অভ্যাসে পরিণত করে নাও।
কারণ এমন কিছু সময় আছে যখন আল্লাহ তা’আলা যেকোনো দু’আকারীর দু’আ কবুল করেন।
হযরত আবু মূসা (রা.) বলেন, আমাদের সুরক্ষাদানকারী দুটি জিনিস ছিল, তন্মধ্যে হতে একটি চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছে।
সেটা হলো আমাদের মাঝে রাসূল (সা.)-এর উপস্থিতি। আর দ্বিতীয় জিনিস ইস্তেগফার যা এখনো আমাদের মাঝে রয়ে গেছে।
যেদিন এটিও চলে যাবে (করার মতো কেউ থাকবে না) তখন আমাদের ধ্বংস অনিবার্য।
হযরত হাসান (রহ.) বলেন, তোমরা ঘরে-দুয়ারে, দস্তরখানে, রাস্তা-ঘাটে, হাটে-বাজারে।
সভা-সমাবেশে বেশি বেশি ইস্তেগফার করো। কারণ ইস্তেগফার কবুল হওয়ার সময় তোমাদের জানা নেই।
ইস্তেগফারের ফজীলত:
ইস্তেগফার আল্লাহর ইবাদত। ইস্তেগফারের কারনে গুনাহ মাফ হয়, বৃষ্টি বর্ষণ হয়।
সন্তান ও সম্পদ দ্বারা সাহায্য করা হয় এবং জান্নাতের অধিকারী করা হয়। ইস্তেগফারের ফলে সর্বধিক থেকে শক্তি ও সামর্থ্য বৃদ্ধি পায়।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তিনি তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন” (সুরা হুদ ৫২) ইস্তেগফারের ফলে সুখ-সমৃদ্ধি ও প্রাপ্য হক অর্জিত হয়।
ইস্তেগফারের ফলে বালা-মুসিবত দুরীভূত হয়।
তাওবা ও ইস্তেগফারের মাঝে পার্থক্য:
তাওবা ও ইস্তেগফারের মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। তাওবার মধ্যে তিনটি বিষয়ের উপস্থিতি জরুরি।
১. অতীতের কৃতকর্মের ওপর লজ্জিত হওয়া ও অনুশোচনা করা।
২. তাৎক্ষণিক গোনাহ ছেড়ে দেওয়া এবং
৩. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা।
এ তিনটি শর্ত মেনে তাওবা করলে আল্লাহ তাওবা গ্রহণ করবেন ৷
অন্যথায় মুখে মুখে তাওবা করছি বললেই তাওবা হবে না ৷
আর ইস্তেগফারের মর্ম হলো– আল্লাহর কাছে গোনাহ মাফ করার দু’আ করা।
দুনিয়াতে গোনাহ ও অপকর্মগুলো প্রকাশ না করার দরখাস্ত করা।
আর আখিরাতে এসব বিষয়ে হিসাব না নেওয়ার দু’আ করা।
ইস্তেগফারের সময়ঃ
ইস্তেগফার সব সময় করা যায় ৷ কিন্ত গুনার পর ইস্তেগফার করা ওয়াজিব এবং নেক আমল করার পর মুস্তাহাব।
যেমন সালাত শেষে তিনবার ইস্তেগফার করা, হজ্ব শেষে ইস্তেগফার করা ইত্যাদি।
তবে সেহরীর সময় ইস্তেগফার করা বেশী ফজীলত, বরং মুস্তাহাব।
কারণ এ সময় ইস্তেগফারকারীদের আল্লাহ তায়ালা বেশী প্রশংসা করেছেন।
নারীদের জন্য ইস্তেগফার করার গুরত্বঃ
নারীদের জন্য ইস্তেগফার করা খুব জরুরী। নবী করিম (সাঃ) নারীদের কাছে এসে বলেনঃ “হে নারীগণ, তোমরা সদকা কর, বেশী বেশী ইস্তেগফার কর।
কারণ তোমাদের অধিকাংশকেই আমি জাহান্নামের অধিবাসী দেখেছি।
তাদের মধ্যে বাকপটু এক নারী বলে উঠলঃ আমাদের অধিকাংশ জাহান্নামী হওয়ার কারণ কি? তিনি বললেনঃ তোমরা বেশী লা‘নত কর এবং স্বামীদের নাশুকরি কর। (মুসলিম)
sayyidul istighfar bangla
ইস্তেগফার সম্পর্কিত রাসুল হদীস:
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি ইস্তেগফারকে অবশ্যম্ভাবী করবে।
আল্লাহ তাকে সকল সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করবেন এবং সকল পেরেশানী থেকে তাকে নাজাত দেবেন আর এমন জায়গা থেকে রিযিক দেবেন, যার কল্পনা পর্যন্ত সে করেনি ।”
ইস্তেগফারের বিশেষ কিছু উপকার:
১. এটি গোনাহকে মুছে ফেলে ও বান্দার মর্যাদা উন্নীত করে।
২. এর মাধ্যমে বালামুসিবত দূর হয়।
৩. রিজিক প্রশস্ত হয়।
৪. পরিবারে শান্তি আসে।
৫. শরীরে ঈমানি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৬. হৃদয় স্বচ্ছ ও নির্মল হয়।
৭. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়।
৮. চিন্তা-পেরেশানি দূর হয়।
নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সকালে সায়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে ।
যদি সন্ধ্যা হওয়ার আগে মারা যায় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
আর যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সন্ধ্যায় সায়্যিদুল ইস্তিগফার পড়ে সে যদি সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
-সহিহ বোখারি: ৬৩০৬
sayyidul istighfar bangla
সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার অর্থ:
সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার ৷ আরবিতে سيد الاستغفار ৷ শাব্দিক অর্থঃ এখানে দুটো শব্দ মিলে একটি বাক্য হয়েছে ৷
সাইয়্যেদ অর্থ নেতা বা সরদার ৷ শ্রেষ্ঠও হয় ৷ ইস্তেগফার অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা ৷ দুটো মিলে অর্থ দাঁড়ায় ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দুআ ৷
সাইয়েদুল ইস্তেগফার আরবি:
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْت
সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ :
আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি। লা ইলাহা ইল্লা আনতা। খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা।
ওয়া আনা আলা আহদিকা। ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাতা’তু। আউজু বিকা মিন শাররি মা-সানা’তু।
আবুয়ু লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা। ওয়া আবুয়ু লাকা বি জাম্বি। ফাগফিরলী। ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনবা ইল্লা আনতা
সাইয়েদুল ইস্তেগফারের বাংলা অর্থ :
হে আল্লাহ! একমাত্র আপনিই আমাদের প্রতিপালক। আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই।
আপনিই আমার স্রষ্টা এবং আমি আপনার দাস। আমি আপনার সঙ্গে কৃত ওয়াদা ও অঙ্গীকারের ওপর সাধ্যানুযায়ী অটল ও অবিচল আছি।
আমি আমার কৃতকর্মের সব অনিষ্ট হতে আপানার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমার উওর আপনার দানকৃত সব নেয়ামত স্বীকার করছি।
আমি আমার সব গুনাহ স্বীকার করছি। অতএব, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। কেননা, আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার ছবি :
ইস্তেগফার ভিডিও ডাউনলোড :
সাইয়েদুল ইস্তেগফারের ফজিলত :
সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার ফজিলত রয়েছে অনেক।
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন।
যে ব্যক্তি দূর বিশ্বাসের সাথে সাইয়েদুল ইস্তেগফার সকালে পাঠ করে সারাদিনের কোন অংশে যদি সে মারা যায় তবে সে জান্নাতি হবে।
তাদের প্রতি রাতে পাঠ করে তাহলে রাতে মারা গেলেও সে জান্নাতি হবে।
অর্থাৎ সাইয়েদুল ইস্তেগফার সকালে বিকালে দুই বার পাঠ করলে সারা দিনে যদি কেউ মৃত্যুবরণ করে থাকে তবে সে জান্নাতের লাভ করবে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস থেকে বোঝা যায় সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠের ফজিলত কত বেশি।
বিশ্বনবী সাঃ বলেছেন,
এই দোয়া সকালে পড়ে রাতের আগে মারা গেলে অথবা রাতে পড়ে সকালের আগে মারা গেলে সে জান্নাতে যাবে। [বুখারী-৬৩০৬]
কিভাবে ইস্তেগফার করবো:
ইস্তেগফার মানে আপনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন ৷ যতটা বিনয়ের সাথে ক্ষমা চাওয়া যায় ৷
আপনি তাহাজ্জুদ পড়ে ইস্তেগফার করতে পারেন ৷ তখন দুআ কবুল হয় ৷
অথবা যে কোনো সময়, যে কোনো মুহূর্তে আপনি তাওবা ইস্তেগফার করতে পারন ৷
কুরআন সুন্নাহর ভাষায় ইস্তেগফার করা উত্তম ৷ নিজের ভাষাতেও ইস্তেগফার করা যাবে ৷
ইস্তেগফার করার বা ক্ষমা চাওয়ার ৫টি দোয়া নিম্নে উল্লেখ করলাম ৷
সব চেয়ে ছোট ইস্তেগফার হলো-
দুআ-১
أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হ।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
প্রতি ওয়াক্তের ফরয সালাতে সালাম ফিরানোর পর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দোয়া ৩ বার পড়তেন। [মিশকাত-৯৬১]
এছাড়াও সারাক্ষণ টয়লেট-বাথরুম ছাড়া এই ইস্তেগফার টি পড়ে জিহবা ভিজিয়ে রাখুন এর ফজিলত অনেক বেশি।
দুআ-২:
أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হা ওয়া আতূবু ইলাইহি।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর দিকে ফিরে আসছি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবা ও ইসতিগফার করতেন। [বুখারী-৬৩০৭]
দোয়া-৩:
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম ওয়া আতূবু ইলায়হি।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা‘বূদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছে তাওবাহ্ করি।
এই দোয়া পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন-যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র হতে পলায়নকারী হয়। [আবু দাউদ-১৫১৭, তিরমিযী-৩৫৭৭, মিশকাত-২৩৫৩]
দুাআ-৪:
sayyidul istighfar bangla
رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ / الغَفُوْرُ
উচ্চারণঃ রাব্বিগ্ ফিরলী, ওয়া তুব ‘আলাইয়্যা, ইন্নাকা আনতাত তাওয়া-বুর রাহীম। দ্বিতীয় বর্ণনয় “রাহীম”-এর বদলে: ‘গাফূর’।
অনুবাদঃ হে আমার প্রভু, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়। দ্বিতীয় বর্ণনায়: তাওবা কবুলকারী ও ক্ষমাকারী।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।
[আবূ দাঊদ-১৫১৬, ইবনু মাজাহ-৩৮১৪, তিরমিযী-৩৪৩৪, মিশকাত-২৩৫২]
দোয়া-৫: সাইয়েদুল ইস্তিগফার-বা আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার শ্রেষ্ঠ দুআ ৷ যা উপরে লিখেছি ৷
তাওবার নামাজ কীভাবে পড়বো:
গোনাহ মাফের জন্য সালাতুত তাওবা বা তাওবার নামাজ অত্যন্ত কার্যকরী একটি আমল।
হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, আমি রাসূল (সা.)কে বলতে শুনেছি- যখন কেউ গোনাহ করার পর সুন্দরভাবে ওজু করে (জায়নামাজে) দাঁড়িয়ে যায় এবং দু’রাকাত সালাত আদায় করে,।
অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। (আবু দাউদ-১৫২১)।
সুতরাং যে কোনো গুনাহ হয়ে গেলে আমাদের উচিত, সঙ্গে সঙ্গে সুন্দরভাবে ওজু করে একান্ত মনোযোগসহকারে দুই বা চার রাকাত তাওবার নামাজ আদায় করা।
এবং দয়াময় আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নিশ্চয় তিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু।
অন্যান্য নামাজের মতো যে কোনো সূরা দিয়ে তাওবার নামাজ পড়া যায়। তাওবার নামাজ পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই।
Tag :
sayyidul istighfar bangla
sayyidul istighfar hadith bangla
sayyidul istighfar with bangla
sayyidul istighfar bangla translation
sayyidul istighfar meaning in bengali
sayyidul istighfar bangla pdf download
sayyidul istighfar dua with meaning
sayyidul istig’for
sayyidul istighfar with bangla meaning
how to say bangladesh in bengali
when to recite sayyidul istighfar
sayyidul istighfar duasi anlami